করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আরও দুই সপ্তাহের লকডাউনের সুপারিশ করেছেন দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কারিগরি কমিটির বিশেষজ্ঞরা। সিটি করপোরেশন এলাকায় পূর্ণ লকডাউনের সুপারিশও করেছেন তারা।
পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটির ৩০তম অনলাইন বৈঠকে এ সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এরপর শুক্রবার কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সই করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক মাস ধরে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে। তা নিয়ন্ত্রণে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিধিনিষেধ দিলেও তা না মানায় করোনা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বেড়েছে। এই সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে আরও দুই সপ্তাহের লকডাউন করা যেতে পারে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা ও উচ্চ সংক্রমণ এলাকাগুলোতে দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন দেয়া যেতে পারে।
এদিন সকালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন নিয়ে ভাবছে সরকার। এটি কার্যকর হতে পারে ১৪ এপ্রিল থেকে।
‘দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা। এমন অবস্থায় সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা ভাবনা করছে।’
চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন কাদের।
এর আগে ৩ এপ্রিল সারা দেশে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণার কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওইদিন ওবায়দুল কাদেরের পাশাপাশি লকডাউন দেয়ার কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনার সংক্রমণ রোধ করার স্বার্থে সরকার দু-তিন দিনের মধ্যেই সারা দেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে এক সপ্তাহের জন্য।
৪ এপ্রিল লকডাউন নিয়ে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গণপরিবহন বন্ধ রেখে শিল্প, কল-কারখানা খোলা সরকারি সিদ্ধান্তে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। অফিসমুখী মানুষ গাড়ি না পেয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করে। এমন বাস্তবতায় লকডাউনের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ৭ এপ্রিল থেকে খুলে দেয়া হয় গণপরিবহন।
তাতে জনভোগান্তি কমেছে। কিন্তু কমেনি সংক্রমণের ভয়াবহতা।
সড়কে বাস নামতেই ঢাকা ফিরেছে চিরচেনা রূপে। বুধবার বেলা যত বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজধানীর সড়কে বেড়েছে মানুষের সংখ্যা। বিধিনিষেধের কোনো তোয়াক্কা ছিল না কারও মধ্যে।
বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শপিং মল দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।