চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামরে তাণ্ডবের দুই সপ্তাহ পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদের নাম প্রাথমিকভাবে জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ধরা পড়া চার জন কেউ হেফাজতের দায়িত্বশীল কেউ নন আর তারা হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্রও নন।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আফজারুল হক টুটুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তাণ্ডবে জড়িত চারজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।’
তাদেরকে কখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতরা কোথায় আছে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার তদন্ত ও নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কিছু তথ্য প্রকাশ করছি না।’
গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের দিন হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে হেফাজত কর্মীরা তাণ্ডব চালায়।
তারা স্থানীয় ডাক বাংলোতে হামলা করে সেখানে থাকা পুলিশের একজন সহকারী কমিশনারকে বের করে তাকে মারধর করে। হামলা করা হয় আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারা এখন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি।
হামলাকারীরা এসিল্যান্ড অফিসেও হামলা করে। এরপর হামলা চালায় হাটহাজারী থানায়। সে সময় পুলিশ গুলি চালালে চার জন নিহত হয়।
এই তাণ্ডবের পাঁচ দিন পর ৩১ মার্চ থানায় মামলা হয়। তবে এতে হেফাজতের কারও নাম না থাকা নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়।
কেবল হাটহাজারীতে নয়, সেদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং দুই দিন পর ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আমজিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফের ধ্বংসযজ্ঞের মামলাতেও হেফাজতের কারও নাম ছিল না।
তবে গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নারী নিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হক অবরুদ্ধ হলে পাল্টে যায় পরিস্থিতি।
মামুনুলকে উদ্ধারে সেদিন হেফাজত কর্মীরা সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে হামলা চালায়। ভাঙচুর চালানো হয় আওয়ামী লীগের স্থানীয় কার্ালয়ে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাদের বাড়িঘরও তছনছ করা হয়।
সোনারগাঁওয়ের পাশাপাশি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও সুনামগঞ্জের ছাততেও হেফাজত কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হয় আওয়ামী লীগের কার্ালয়গুলো।
পরে মামুনুলকে আসামি করে মামলা হয় নারায়ণগঞ্জে। এর পাশাপাশি ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলাতেও তাকে আসামি করা হয়।
এরপর নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন হেফাজত নেতা শিশুবক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম। মামুনুল হকও যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
হেফাজতকে সতর্ক করে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ভাঙচুর করা কার্ালয় পরিদর্শন করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, হেফাজতের আঘাত এসেছে, এখন প্রতিঘাত হবে।