বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংক্রমণ ঠেকাতে আরও কঠোর ব্যবস্থার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ৮ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:০২

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাৎক্ষণিক অনেক ব্যবস্থা নিলেও জনগণকে বাঁচাতে ভবিষ্যতে হয়তো আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেকে আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন এবং অন্যরাও যেন মেনে চলে সে ব্যবস্থা নেবেন।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক সপ্তাহের লকডাউন শুরুর চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস একাডেমির ৭১তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে দেয়া বক্তব্যে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস এখন একটা মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে এবং আমরাও সেই ধাক্কা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা আমরা নিলেও হয়তো ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ আমাদের নিতে হবে মানুষকে বাঁচানোর জন্য। সেটা আমরা নেব।

‘আপনারাও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন; স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। জনগণও যেন সুরক্ষিত থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন। আমি সমগ্র দেশবাসীকে বলব প্রত্যেকে আপনারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিটা মেনে যাতে চলেন সে ব্যবস্থাটা নেবেন।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন-জীবিকা চলতে হবে। মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে পারি না। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা একান্তভাবে অপরিহার্য। সেদিকে সকলে আন্তরিকতার সাথে কাজ করবেন।’

এ সময় সবাইকে মাস্ক পড়ার তাগিদও দেন সরকার প্রধান।

‘মানুষ মানুষই’

প্রশাসনে দায়িত্ব পালনের সময় সব মানুষের প্রতি একই আচরণ করতে জনপ্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘সিভিল সার্ভিসে যারা কাজ করেন তাদের এটাই মনে রাখতে হবে যে দেশের মানুষের জন্যই আপনাদের কাজ করতে হবে।

‘আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র কোনো ভেদাভেদ না। মানুষ মানুষই।

‘মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখে তাদের সার্বিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তাদেরকে সমান অধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে এবং সেই মানসিকতা নিয়েই জনগণের সেবা করবেন, এটাই আমি চাই।’

তিনি বলেন, ‘কারণ দরিদ্র কেউ তো ইচ্ছা করে হয় না। তার দরিদ্র ঘরে জন্মালেই তাকে আমরা অপবাদ দিয়ে দিতে পারি না বা কেউ প্রতিবন্ধী হলেই তাকে অপবাদ দিতে পারি না। কিন্তু তাদেরকে সাহায্য করা দরকার যেন তারাও সমাজে উঠে দাঁড়াতে পারে, মাথা উঁচু করে চলতে পারে। সেইভাবেই আমরা কাজ করতে চাই।

‘বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক। সে একেবারে হতদরিদ্র হোক, একজন কৃষক-শ্রমিক হোক বা একজন ভিখারি হোক। সেও কিন্তু এ দেশের মালিক। আমাদের সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদেও কিন্তু এ কথাই বলা আছে যে, প্রজাতন্ত্রের মালিক কিন্তু জনগণ। আপনারা তাদের সেবা দেবেন, এটাই আমি চাই।’

‘উন্নয়নের অর্জন সরকারের একার নয়’

সরকারে এক যুগে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তার কৃতিত্ব দেশের সব মানুষকে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের যে অর্জন আমরা এ পর্যন্ত করেছি এটা আমি বলব না যে এটা আমার একার বা আমার দলের বা আমার সরকারের।

‘আমি সবাইকে সাধুবাদ জানাই যে আমাদের এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের সকলে প্রশাসন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। হয়তো সব নাম আমি বলতে পারছি না। কিন্তু প্রত্যেকে যাকে যেখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রত্যেকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে বলেই মাত্র ১২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আমরা বিরাট পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮-এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯-এ যখন আমরা সরকার গঠন করি। আমরা ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত একটানা সরকারে আছি বলেই দেশের উন্নয়নের কাজগুলো ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি।

‘করোনাভাইরাস নামে একটি ভাইরাস আজকে সারা বিশ্বকে তোলপাড় করে দিয়েছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতেই একটা বাধা আসছে। তারপরেও আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে আমরা এর ভেতরেও আমরা বাজেট প্রণয়ন করে যাচ্ছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘পরিকল্পনাগুলি হাতে নিচ্ছি এবং হয়তো কিছুদিনের জন্য সবকিছু থমকে গিয়েছিল। তারপরেও আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রেখেছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই।

‘আমি জানি, এখন আমার যে বয়স তাতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপরিচালনা করা বা বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আজকে যারা নবীন অফিসার, যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে কাজে যাবেন, আপনাদের ওপরেই কিন্তু এ দায়িত্ব পড়বে। আমি বলব, একচল্লিশের উন্নত বাংলাদেশ গড়বার সৈনিক হচ্ছে আজকের এ নতুন প্রজন্ম, যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যোগ দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘এ কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে সততার সাথে, নিষ্ঠার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে বাংলাদশে আমাদের মাতৃভুমি, আমরা বাঙালি, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি।

‘আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে চলব। পঁচাত্তরের পর সে সম্মান আমরা হারিয়েছিলাম। কিন্তু ২০০৯ এর পর থেকে এ পর্যন্ত নিরলস পরিশ্রম করে সে সম্মান আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতে যেন আর কখনো এ সম্মান নষ্ট না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, এখনকার নতুন প্রজন্ম এত বেশি প্রযুক্তির বিকাশের কারণে আজকে তাদের চিন্তা-ভাবনা, শিক্ষা অনেক বেশি অগ্রগামী। কাজেই এগুলি কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সবসময় দেশের মানুষের জন্য যে একটা কর্তব্যবোধ সেটা অবশ্যই থাকতে হবে।’

‘২১টা বছর সময় নষ্ট হয়েছে’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে অবৈধ ক্ষমতা দখল করে দেশকে আদর্শ বিচ্যুত করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব তিনি (বঙ্গবন্ধু) হাতে নিয়েছিলেন। বলতে গেলে একেবারে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যাত্রা শুরু করেন।

‘হাতে সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ৩ বছর। একটি জাতির জন্য এটি অত্যন্ত স্বল্প একটি সময়। কিন্তু এই সাড়ে তিন বছর সময়ে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছিলেন। একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় গড়ে তোলার সব আইন, নীতি, বিধি সব কিছু করে দিয়েছিলেন। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন রাষ্ট্র রাষ্ট্রপরিচালনা করতে যাই তখন দেখি, এত অল্প সময়ের মধ্যে আমার মনে হয় পৃথিবীর কোনো দেশের কোনো নেতা এভাবে করতে পারেননি, যে একটা রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে তিনি কীভাবে দাঁড় করিয়েছিলেন।

‘শুধু তাই না, অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশকে স্বাবলম্বী করার জন্য তিনি খেতে-খামারে, কল-কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির…আহ্বান জানিয়েছিলেন।’

এ বিভাগের আরো খবর