বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাসে চেনারূপে ঢাকা, স্বাস্থ্যবিধি উধাও

  •    
  • ৭ এপ্রিল, ২০২১ ০৯:২৮

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাস চলছে সব রোডে। সাধারণ মানুষের চলাফেরায় স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো তাগিদ নেই। মাস্ক নেই বেশির ভাগ মানুষের মুখে। কারও কারও মাস্ক ঝুলছে থুতনি বা গলায়।

টানা দুই দিন স্থবিরতার পর গণপরিবহন আবার চলা শুরু হওয়ায় লকডাউনের তৃতীয় দিনেই স্বাভাবিক রূপে ফিরে এসেছে রাজধানী ঢাকা। আগের মতোই চলছে বাস, মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এসবে বিলীন করোনার বিস্তার প্রতিরোধে সরকারের আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনো তাগিদ নেই। মাস্ক নেই বেশির ভাগ মানুষের মুখে। কারও কারও মাস্ক ঝুলছে থুতনি বা গলায়।

হালিম উদ্দিন থাকেন রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকায়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই চাকরিজীবী, জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ছুটে যান উত্তরা। তবে আজ কিছুটা নির্ভার তিনি। কারণ লকডাউনের তৃতীয় দিনে এসে, চলছে বাস।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিটা মাথায় নিয়েও, খরচ কমবে এটা ভেবেই স্বস্তিতে হালিম। তিনি জানালেন, ‘যতটা পারি সাবধান থাকি। কিন্তু অফিস যেহেতু যেতে হচ্ছে, কিছু তো করার নেই। বাস হলে খরচটা অনেক কমে আসে। সিএনজি নিয়ে তো প্রতিদিন যাওয়া-আসা আমার পক্ষে অসম্ভব।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। যদিও এটি লকডাউন কি না, তা নিয়ে সরকার নিজেই দ্বিধাবিভক্ত। সরকারের মন্ত্রীরা লকডাউন বললেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলছেন বিধিনিষেধ।

করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে লকডাউনের তৃতীয় দিন বুধবার সকাল থেকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীতে বাস চলাচল শুরু করেছে। ছবিটি রাজধানীর বানানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

লকডাউনের প্রথম দুদিন বাস ছাড়া রাজধানীর চেহারা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু অফিসমুখী মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে তৃতীয় দিনে এসে অনুমতি দেয়া হয় বাস চলাচলের। তাতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও, করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিতে লাগাম টানা মুশকিল হিসেবেই দেখছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বাস চলার মধ্য দিয়ে রাজধানীও ফিরে পেয়েছে তার স্বাভাবিক চেহারা। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মগবাজার, ফার্মগেট, বাড্ডা রোডে যানজটও দেখা যায়। সময় যত গড়িয়েছে, পরিবহনের সংখ্যাও বেড়েছে, সড়কও হয়েছে ধীরগতির।

মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, লকডাউনে মহানগরে চলাচলের ভোগান্তি বিবেচনায় এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, বুধবার থেকেই ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলাচল শুরু হবে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শুধু দিনের বেলায় চলবে বাস।

৬০ ভাগ বেশি ভাড়া আদায়ের শর্তে বাসগুলোতে প্রতি দুই আসনে একজন যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আর লকডাউনে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চালু থাকবে বাস সেবা। তবে কোনো কোনো বাসে অনিয়মের অভিযোগ মিলেছে।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা ছিল সবার। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে মাস্ক পরা আর সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে ছিল না কোনো আগ্রহ।

তড়িঘড়ি বাসে উঠতে গিয়েও কোনোভাবে রক্ষা হয়নি সামাজিক দূরত্ব। যেহেতু গণপরিবহনের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যাটা বেশি, আর তোলা হবে অর্ধেক যাত্রী, ফলে যাত্রীদের সবার মধ্যেই ছিল আগে উঠার প্রতিযোগিতা।

এমন পরিস্থিতিতে বাসের অর্ধেক আসনে যাত্রী নেয়ার বিষয়টিও অনেক সময় নিশ্চিত করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাধারণ এক যাত্রী বিক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘আরে মিয়া অফিস যাইতে হবে, ধাক্কাধাক্কি না করলেও জীবনেও উঠতে পারুম না।’

তৃতীয় দিনে এসে রাজধানীতে বিপণিবিতানগুলো বন্ধ থাকলেও সকালে খোলা ছিল সব ধরনের দোকানপাট। খোলা জায়গায় কাঁচা বাজারের থাকার কথা থাকলেও মানা হয়নি কোনো নিয়মকানুন। মানুষের অবাধ চলাফেরাও ছিল লক্ষণীয়।

রেস্টুরেন্টগুলোতে ক্রেতাদের বসিয়ে খাবার বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছে না কিছুই। বিশেষ করে, রাজধানীর অলিগলির খাবারের দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় ছিল অন্য দিনের মতোই।

সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নজরদারির অভাবটাও স্পষ্ট। যদিও সরকারের ১১ দফা নির্দেশনায় বলা ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন বলপ্রয়োগে করতে চান না তারা। বুঝিয়ে শুনিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ চায় সরকার।

তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা চায় সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর