পাবনা শহরতলীর দোহারপাড়ার মেয়ে আইরিন ইসলাম মেরীর সঙ্গে প্রায় ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় পুরান ঢাকার তৌহিদুল ইসলামের। এরপর থেকেই তারা আমেরিকা প্রবাসী।
এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। দুই বছর আগে মা আলতাফুন্নেসাকে পাবনা থেকে ডালাসে নিয়ে যান মেরী।
ডালাসের অ্যালেন সিটির বাসা থেকে সোমবার পরিবারটির ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।
তারা বলছে, পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন আইরিন তৌহিদ দম্পতির দুই ছেলে ফারহান ও তানভীর।
ডালাসের ওই বাড়িতে ছিলেন ৭৭ বছর বয়সী আলতাফুন্নেসা, তার মেয়ে আইরিন ইসলাম মেরী, তার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম, মেয়ে পারভিন তৌহিদ এবং দুই ছেলে তানভীর তৌহিদ ও ফারহান তৌহিদ।
মঙ্গলবার সকালে স্বজনদের মৃত্যুর সংবাদ পাবনার বাড়িতে পৌঁছানোর পর শুরু হয় মাতম।
স্বজনরা জানান, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ফারহান, তানভীর। পরিবারেও ছিল না তেমন কোনো সংকট। হতাশার কারণে পরিবারের সবাইকে হত্যা করে তারা আত্মহত্যা করেছে এমন কথা মানতে পারছেন না কেউ।
সকাল থেকেই বাড়িতে ভিড় জমান স্বজন প্রতিবেশীরা।
নিহত আলতাফুন্নেসার বড় ছেলে আরিফুর রহমান আলফা বলেন, ‘আমার বোন কেবল তার পরিবারই নয়, আমাদেরও সবকিছু দেখভাল করত। তার নিজের সংসারে কখনই অশান্তি ছিল না। ছেলে-মেয়েরাও প্রতিভাবান, মেধাবী ও ভদ্র।
‘তারা বাবা মায়ের পাশাপাশি সেখানে বেড়াতে যাওয়া তাদের নানিরও (আমার মা) যত্ন নিত। এমন ছেলেরা বাড়ির সবাইকে হত্যা করেছে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।’
আলতাফুন্নেসার ছোট ছেলে আবুল কালাম আজাদ হিরণ বলেন, ‘মা গত বছর আমেরিকায় বোনের বাড়িতে গিয়েছেন। করোনার কারণে আটকে গিয়েছিলেন। ৭ এপ্রিল তার পাবনায় ফেরার কথা ছিল। নানিকে বিদায় জানাতে টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে আমার ভাগ্নি পারভিনও ডালাসের বাড়িতে ফিরেছিল। কে জানত তাদের এমন মৃত্যু হবে।’
স্বজনরা জানান, নিউইয়র্ক থেকে আলতাফুন্নেসার আরেক ছেলে টেক্সাস পৌঁছলে তাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।