বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না: মামুনুল প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  •    
  • ৬ এপ্রিল, ২০২১ ১৬:৩৪

‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপারসহ এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ ওখানে বসে যেখানে যা প্রয়োজন আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা সেই ব্যবস্থাটি করবে।’

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বলেছেন, তদন্তে যারাই চিহ্নিত হবে, ব্যবস্থা নেয়া হবে সবার বিরুদ্ধেই।

তিনি বলেন, ‘যদি তিনি (মামুনুল) অপরাধ করে থাকেন, মামলা তো হবেই। মামলা তো মামলার গতিতে চলবে। সেখানে কারও হাত নেই। যে অপরাধ করে, তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী কোর্ট তার বিচার করবে।’

গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের ঘটনায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিবসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার পর দিন মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলে তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে নাশকতা হবে, কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে যারাই চিহ্নিত হবে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোর কমিটির বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্ত্রী।

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনকে কেন্দ্র করে মামুনুল হকসহ হেফাজত নেতারা ক্রমাগত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তারা সমর্থকদেরকে উত্তেজিত করে যেসব বক্তব্য দিয়ে আসছেন সেগুলো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে।

গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের ঘটনায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে

ওইদিন ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ২৮ মার্চ ওই দুই এলাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর আর ৩ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রিসোর্ট কাণ্ডের পর, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের ছাতকে তাণ্ডব চালিয়েছে হেফাজত সমর্থকরা।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নে ভাঙচুর, বেপরোয়া আচরণ ও আগুন দিয়েছে তারা। তবে এসব ঘটনায় করা মামলায় হেফাজত নেতাদের কারও নাম না থাকায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে সরকার। ধর্মভিত্তিক এই সংগঠনের নেতাদেরকে কেন ছাড় দেয়া হচ্ছে, তা নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

হেফাজতের সাম্প্রতিক তাণ্ডবের পর সংগঠনের নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্য ও হুমকির বিষয়টি সামনে আসছে

এর মধ্যে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে স্পষ্টতই বলেছেন, ছাড় দেয়া হবে না কাউকে।

সরকারপ্রধানের এই বক্তব্যের পরদিনই পল্টন থানায় মামলা হয় মামুনুলের বিরুদ্ধে।

শনিবার সোনারগাঁওয়ে এক নারীকে নিয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর, মামুনুল তাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করলেও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে তার দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি ফেসবুক লাইভে এলেও তাকে প্রকাশ্যে আর দেখা যায়নি।

হেফাজত নেতা মামুনুলকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে কামাল বলেন, ‘পুলিশি হেফাজতে নিলে, তাকে কীভাবে বাইরে দেখছেন? তিনি তো বাইরে দিব্যি ঘুরছেন তার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব সবাইকে নিয়ে।’

হেফাজতের তাণ্ডব নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিনা কারণে, বিনা অজুহাতে কয়েকজন নিরীহ লোক প্রাণ হারিয়েছেন। যারা প্রাণ হারিয়েছেন আমরা পরিচয় দেখেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও অন্যান্য জায়গায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্রের চেয়ে বহিরাগতই বেশি ছিল, সাধারণ মানুষ বেশি ছিল। কারও প্রাণহানি ঘটুক এটাও আমরা চাই না।’

সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপারসহ এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ ওখানে বসে যেখানে যা প্রয়োজন আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা সেই ব্যবস্থাটি করবে।’

গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ মামুনুলকে ছিনিয়ে নিতে এসে হেফাজত সমর্থকরা তাণ্ডব চালায়

উপজেলা ভূমি অফিস, তহসিল অফিসসহ সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ আর ভাঙচুরের ঘটনায় জনভোগান্তি বেশি হয়েছে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসব সহিংসতা প্রতিরোধে জনগণকে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানেই নাশকতা হবে, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যারা এই নাশকতা করবেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যারা চিহ্নিত হবেন, দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী আমরা সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সারাদেশে হাজার হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে জানিয়ে কামাল বলেন, সরকার বাধ্য হয়ে এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৭ দিনের লকডাউন দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এটার ব্যাপকতা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, আপনারা দেখেছেন হসপিটালে কোনো সিট নেই। শুধু তাই নয়, যারা অক্সিজেন সরবরাহ করছেন, তারা অক্সিজেন সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।’

মহামারি মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে এসে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘সকল ধরনের ধর্মীয়, সামাজিক এমনকি বিবাহ, জন্মদিন উৎসবও বন্ধ করা হয়েছে। সবাইকে বলব, সবাই যেন লোক সমাগম হয়, এমন কোনো আয়োজন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর