নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এম ভি সাবিত আল হাসান থেকে উদ্ধার করা ২৭টি মরদেহের মধ্যে ২৫টি মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিউজবাংলাকে জানান, লাশ দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারকে। উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করা হয়েছে। নৌ চ্যানেল খুলে দেয়া হয়েছে। যাতে করে নদীতে নৌযান চলাচল করতে পারে।
তিনি আরও জানান, এসকে ৩ নামের ওই লাইটার জাহাজটিকে আটক করতে নৌ পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) মো.সালেউদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার অভিযান শেষ করা হলেও ফায়ার সার্ভিস অভিযান চলমান রেখেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য পাওয়া না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।
উদ্ধার করা মৃতদেহের মধ্যে নিখোঁজ স্বজনদের না পেয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ঘটনার এত ঘণ্টা পর স্বজনরা জীবিত পাওয়ার আশা তারা ছেড়ে দিয়েছে। তবে অন্তত প্রিয়জনের মৃতদেহটি চান তারা।
স্বজনের মৃতদেহের অপেক্ষা করছিলেন দাউদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মিরপুর থেকে চাকরির জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চে ওঠে তার আত্মীয় মো. সুজন। এখনো তার মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। আমরা তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে এখানে এসেছি।’
আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ভাই ও ভাবিকে পেয়েছি কিন্তু তাদের শিশু সন্তানকে এখনো পাইনি। আমরা ভাই-ভাবির লাশ নিয়ে মুন্সিগঞ্জে যাব। তাদের দাফন করে আবার আসব।’
রোববার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের লঞ্চঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এম ভি সাবিত আল হাসান নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি।
সোয়া ৬ টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছলে এস কে থ্রি নামে লাইটার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়।
নৌযানটিতে অন্তত ৫০ জন যাত্রী ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ২০ জন সাঁতরে তীরে উঠেছে ও কয়েকজন আহত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ডুবে যাওয়ার ১৮ ঘন্টা পর লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। পরে এর ভেতর থেকে প্রথমে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ৭ সদস্যের ও বিআইডব্লিউটিএ ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।