নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনায় পাঁচ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২০ জনকে। নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছেন ডুবুরিদলের সদস্যরা।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে এমভি হাবিব আল হাসান নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। এ সময় নৌযানটিতে অন্তত ৫০ জন যাত্রী ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওনা দেয়। কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছালে এসকে থ্রি নামে লাইটারেজ জাহাজ নৌযানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তলিয়ে যায় লঞ্চটি।...ডুবে যাওয়ার সময় লঞ্চটিতে অন্তত ৫০ জন যাত্রী ছিল।’
উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিটিএর ডুবুরিদলের সদস্যরা। কিন্তু দুর্ঘটনার পরপরই ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে বিঘ্নিত হয় এই তৎপরতা। তবে অনেকেই সাঁতরে ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তীরে উঠে আসেন।
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা। ছবি: নিউজবাংলাদুর্ঘটনার খবরে ঘাটে ভিড় করতে থাকেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা। ঘাট এলাকায় আহাজারি করছিলেন বৃদ্ধ শাহিনুর বেগম। একফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বরিশালে যাওয়ার উদ্দেশে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রওনা দেয়। এর পরপরই টিভিতে লঞ্চডুবির খবর পাই। তাদের কারও খোঁজ পাচ্ছি না। তোমারা আমার ছেলেকে এনে দাও।’
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লা আল আরেফিন জানান, পাঁচ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবুরিদলের উদ্ধার অভিযান চলছে। যারা সাঁতরে তীরে এসেছে তাদের নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, লঞ্চডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেটকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়া হবে। আহত ব্যক্তিদের হাসপতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।