বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রিসোর্টকাণ্ড: মামুনুল সমর্থকদের রোষানলে গণমাধ্যম

  •    
  • ৪ এপ্রিল, ২০২১ ২১:১০

‘আমরা গণমাধ্যম যা ঘটে তা প্রচার করি। সেই প্রচারে কারও পক্ষে যায়, কারও বিপক্ষে যায়। এগুলো তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন। আমরা তো বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের চেষ্টা করি। এতে কেউ ক্ষুব্ধ হলে প্রতিবাদ করতেই পারে। কিন্তু তা যদি হঠাৎ করে অফিসের সামনে শতশত মানুষ নিয়ে করা হয়, তাহলে আমি মনে করি তা মিডিয়াকর্মীদের উপর চাপের সৃষ্টি হয়। মিডিয়াকর্মীদের লাগাতার হুমকি, মারধর- এসব কারণে গতকাল মামুনুলের নিউজ প্রকাশ নিয়ে আমরা দ্বিধায় পড়ি। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত নিউজ করেছি। বাকি সব মিডিয়াও করেছে।’ 

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর সংবাদ প্রকাশের জেরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সামনে জড়ো হয়ে হেফাজত সমর্থকরা নানা আপত্তিকর স্লোগান দিয়েছেন।

তাদের এই অবস্থানে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন টেলিভিশন চ্যানেলটির কর্মীরা। তারা পুলিশের নিরাপত্তাও চায়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো গোলযোগ হয়নি।

রোববার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে ডিবিসি নিউজ এর সামনে ঘণ্টাব্যাপী সময় অবস্থান করে মামুনুলের কয়েক শ সমর্থক।

ব্যানারে ‘মহাখালীর সর্বস্তরের জনগণ’ এর কথা উল্লেখ থাকলেও অংশগ্রহণকারীরা হেফাজতের কর্মী সমর্থক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ব্যানারে ডিবিসি, ৭১ টেলিভিশন ও সময় টেলিভিশনের নাম উল্লেখ করা ছিল।

হঠাৎ কয়েক শ মানুষের অবস্থানে ভীতিকর পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল বলে জানান ডিবিসির প্রধান সম্পাদক এম মঞ্জুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা যে পথে আসা-যাওয়া করে সেটা বন্ধ করে তারা অবস্থান নিয়েছিল। অফিসের ভেতরে আমরা যতটা সতর্ক থাকা যায়, থেকেছি। ওরা সন্ধ্যায় আযান হওয়ার পর মোনাজাত করে চলে যায়।’

আগের দিন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে এক নারীকে নিয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। কয়েক ঘণ্টার হাঙ্গামার পর হামলা চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে হেফাজত কর্মীরা।

মামুনুল দাবি করতে থাকেন ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেছেন।

তবে মামুনুল তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার বাবার যে নাম বলেছেন, বাড়ি যেখানে বলেছেন, তার সঙ্গে সেই মেয়ের বক্তব্যের মিল নেই।

মামুনুল দাবি করেন, তার স্ত্রীর নাম আমেনা তাইয়্যেবা। শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম। বাড়ি খুলনায়। তবে মেয়ে জানান, তার নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। বাবা ওলিয়র রহমান। বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার কামারগাঁও গ্রামে।

এর মধ্যে মামুনুলের আসল স্ত্রীর সঙ্গে তার, স্ত্রীর সঙ্গে মামুনুলের বোনের আর ঝর্ণার সঙ্গে হেফাজত নেতার মোবাইল কথোপকথন হিসেবে তিনটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। এগুলো বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশ হয়।

এসব অডিও রেকর্ড প্রকাশ হওয়ার পর হেফাজত কর্মীরা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে গণমাধ্যমকে গালাগাল করে নানা কথা লিখছেন, লাইভে এসে বক্তব্য রাখছেন।

ডিবিসি নিউজের সামনে হেফাজত কর্মীদের অবস্থান প্রসঙ্গে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া রাত সাড়ে সাতটার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামুনুল হকের কিছু সমর্থক অবস্থান নিয়েছিল। তারা সন্ধ্যার আগে চলে গেছে। আমাদের ফোর্স এখনও টেলিভিশন চ্যানেলটির সামনে অবস্থান করছে।’

ডিবিসির প্রধান সম্পাদক এম মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অফিসে মিটিং করছিলাম। হঠাৎ আমাদের একজন সহকর্মী এসে জানাল, অফিসের সামনে কয়েকজন অবস্থান নিয়েছে। নিচে লোক পাঠিয়ে জানলাম, কয়েক মিনিটের মধ্যে দুই-তিন শ লোক জড়ো হয়ে যায়। হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হককে হেয় করার অভিযোগে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেয়।’

তারা কী বলছিল, এমন প্রশ্নে মঞ্জুরুল বলেন, ‘তারা বলছিল সময়, ৭১, ডিবিসির খবরের তদন্ত করতে হবে। মিথ্যা খবর পরিবেশনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’

মামুনুল সমর্থকদের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যম যা ঘটে তা প্রচার করি। সেই প্রচারে কারও পক্ষে যায়, কারও বিপক্ষে যায়। এগুলো তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন। আমরা তো বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের চেষ্টা করি। এতে কেউ ক্ষুব্ধ হলে প্রতিবাদ করতেই পারে। কিন্তু তা যদি হঠাৎ করে অফিসের সামনে শতশত মানুষ নিয়ে করা হয় তাহলে আমি মনে করি তা মিডিয়া কর্মীদের উপর চাপের সৃষ্টি হয়।’

মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘মিডিয়াকর্মীদের লাগাতার হুমকি, মারধর- এসব কারণে গতকাল মামুনুলের নিউজ প্রকাশ নিয়ে আমরা দ্বিধায় পড়ি। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত নিউজ করেছি। বাকি সব মিডিয়াও করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর