সারাদিন তীব্র গরম শেষে সন্ধ্যা বেলা ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেল রাজধানী ঢাকায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এটা ছিল কালবৈশাখী ঝড়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আগে থেকেই পূর্বাভাস ছিল সারাদেশে আজ বজ্র ও বৃষ্টিপাত হবে। কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টিও হতে পারে। আজ কিছু কিছু জায়গায় কালবৈশাখী হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ঝড়ে বাতাসের গতি ছিল সর্বোচ্চ ৬৪ কিলোমিটার। আর রাজশাহীতে ৬২ কিলোমিটার।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও বাকি বিভাগের খবর আসেনি। আমরা রাত নয়টার দিকে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান জানাতে পারব।’
নদীবন্দরগুলোতে সতর্কতা সংকেত আগেই দেখানো হয়েছিল জানিয়ে নাজমুল বলেন, ‘আমরা বিকেল তিনটার সময় কিছু কিছু জায়গায় ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছিলাম। সেখানে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বাতাস থাকতে পারে।’
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঢাকার মালিবাগ, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ধূলিঝড়সহ বৃষ্টি হয়।
বিকেল তিনটায় কালবৈশাখী তীব্র ঝড় হয়েছে গাইবান্ধায়। গাছ চাপা পড়ে ও আতঙ্কে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি, দোকানপাটসহ সরকারি স্থাপনা। নষ্ট হয়েছে আমের মুকুল ও আমন ধানের গাছসহ বিভিন্ন ফসল।
নিহতরা হলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ময়না বেগম, পলাশবাড়ীর আবদুল গাফফার মিয়া, জাহানারা বেগম ও ফুলছড়ির শিমুলী আকতার। আতঙ্কে মারা গেছেন সাদুল্লাপুরে আবদুস সালাম সর্দার নামে এক ব্যবসায়ী।
এ বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে প্রকৃতির বিরূপ আর অস্বাভাবিক আচরণ দেখেছে বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টি যেন হারিয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে গেল দুই মাসে দেশজুড়ে বৃষ্টির দেখা মিলেছে কমই।
ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে স্বাভাবিকভাবে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, তার চেয়ে অনেক কম হয়েছে। এ অবস্থাকে অস্বাভাবিক দেখছেন খোদ আবহাওয়াবিদরা।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টি হয়েছে ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ কম। একই ধারা বজায় ছিল মার্চেও। স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৯.৬ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, মার্চে সারা দেশে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ছিল। সেখানে হয়েছে মাত্র দশমিক ২ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই প্রথম দেশে বৃষ্টির ক্ষেত্রে এমন অস্বাভাবিকতা দেখা দিয়েছে। এর আগে কখনও এত কম বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পশ্চিমা ও পূবালী লঘুচাপের প্রভাব না থাকা।