হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম কী, সেটির পাশাপাশি তার বাড়ি কোথায়, সেটি নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হওয়ার পর হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ওই নারীটির পরিচয়, তার বাড়ি কোথায় সে নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে ওই নারীর দেয়া তথ্যে কোনো মিল নেই।
মামুনুল হক বারবার বলতে থাকেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করেছেন দুই বছর আগে।
স্থানীয় একজন তখন জিজ্ঞেস করেন ওই নারীর নাম কী। জবাবে মামুনুল বলেন আমিনা তাইয়্যেবা।
শ্বশুরের নাম কী- এমন প্রশ্নে মামুনুল বলেন, জাহিদুল ইসলাম। তার বাড়ি খুলনায়।
মামুনুলকে স্থানীয়রা আটক করার পর ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য।
পরে সেই নারীকে নারীকণ্ঠের একজন নানা প্রশ্ন করার আরও একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এই নারী নিজেকে মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয় দিয়েছেন।
এটুকু তথ্যে মিল ছাড়া তার নাম ও বাড়ির পুরো তথ্যই ছিল মামুনুলের দাবির বিপরীত।
তিনি নিজের নাম বলেন, জান্নাত আরা (বাকি শব্দটি অস্পষ্ট)।
বাবার নাম জিজ্ঞেস করলে ওই নারী বলেন, অলিয়র রহমান।
বাড়ি প্রথমে বলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায়, পরে আবার বলেন আলফাডাঙ্গায়।
-তখন যে বললেন ভাঙ্গা থানায়- এমন প্রশ্নে সেই নারী বলেন, ‘ভুল বলেছিলাম।’
ঢাকায় বাসা কোথায়- এমন প্রশ্নে ওই নারী বলেন, মোহাম্মদপুরে।
মোহাম্মদপুরের কোথায়- এমন প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট কিছু না বলে সেই নারী বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের এখানেই বাসা।’
মোবাইল ফোনের কথোপকথন নিয়ে আরও প্রশ্ন
মামুনুলকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা তোলপাড়ের পর তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন হেফাজতের সোনারগাঁ এলাকার নেতা-কর্মীরা। তারা মিছিল নিয়ে হামলে পড়েন রিসোর্টে। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে হামলা চলে গাড়িতে।
এর মধ্যে মামুনুলকে রিসোর্ট থেকে নিয়ে হেফাজত কর্মীরা রাখেন স্থানীয় একটি মসজিদে। সেখান থেকে হেফাজত নেতা রওনা হন ঢাকার পথে।
এর মধ্যে একজন নারী কণ্ঠের সঙ্গে হুবহু মামুনুলের কণ্ঠস্বরের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়, যাতে প্রতীয়মান হয় যে হেফাজত নেতা তার চার সন্তানের জননী স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন।
সেখানে মামুনুলের কণ্ঠে বলা হয়, ‘পুরা বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে আইসা বলব।…এই মহিলা যে ছিল সাথে সে আমাদের শহিদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। বুঝছ?
‘তুমি একটা ওখানে অবস্থা এমন তৈরি হয়ে গেছে ওখানে ওই কথা বলা ছাড়া ওখানে ওরা ই করে ফেলছিল আমাকে, বুঝছ?’ (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)
আচ্ছা, বাসায় আসেন তারপরে কথা যা বলার হবে- নারী কণ্ঠস্বরের এমন বক্তব্যের পর মামুনুলের কণ্ঠস্বরটি বলেন, ‘বলুম তো, তুমি বিষয়টা অন্যান্য কথা অন্যদেরকে বলতে হইব। পরিস্থিতিডা এ রকম হয়া গেছে। এই জন্য তুমি আবার মাঝখান দিয়া অন্য কিছু মনে কইর না।
‘তোমাকে কেউ জিজ্ঞাস করলে তুমি বইল যে, আমি সব সব জানি। এই রকম কিছু একটা বইল।’