বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সে শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ, বুঝছ?’

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৫৯

‘পুরা বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে আইসা বলব।…এই মহিলা যে ছিল সাথে সে আমাদের শহিদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। বুঝছ? তুমি একটা ওখানে অবস্থা এমন তৈরি হয়ে গেছে ওখানে ওই কথা বলা ছাড়া ওখানে ওরা ই করে ফেলছিল আমাকে, বুঝছ?’

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে নারী নিয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে একটি মোবাইল ফোনে ৫৮ সেকেন্ড কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়েছে।

একটি নারী কণ্ঠ এবং একটি পুরুষ কণ্ঠ কথা বলছিলেন। পুরুষের গলার স্বর হুবহু মামুনুল হকের মতোই।

শনিবার দুপুরের পর মামুনুলকে নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টটিতে স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করার পর তিনি ও সেই নারী যে বক্তব্য দিয়েছেন, মোবাইল ফোনের কথোপকথনের বক্তব্য পুরোপুরি বিপরীত।

মামুনুল স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে দাবি করেন, সেই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী, দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেছেন।

পরে সেই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, সেখানে সেই নারীও দাবি করেছেন তিনি মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী।

তবে ওই নারীর নাম কী- সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দুই ধরনের বক্তব্যের কারণে। মামুনুল দাবি করেন, সেই নারীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা। তবে সেই নারী নিজের নাম বলেন জান্নাত আরা (বাকিটা অস্পষ্ট)।

আবার মামুনুল দাবি করেছেন, তার শ্বশুর বাড়ি খুলনায়। শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম। তবে সেই নারী দাবি করেছেন, তার বাবার নাম অলিয়র রহমান, বাড়ি ফদিরপুরের আলফাডাঙ্গায়। অবশ্য আগের মুহূর্তে তিনি বাড়ি একই জেলার ভাঙ্গা উপজেলা বলেও জানিয়েছেন।

এর মধ্যে অন্য একটি নারী কণ্ঠের সঙ্গে মামুনুলের কণ্ঠের অডিও রেকর্ডটি ভাইরাল হয়, তা শুনলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, সেটি তার প্রথম স্ত্রী।

কথোপকথনে সোনারগাঁওয়ের ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা দিচ্ছেন পুরুষ কণ্ঠটি।

কথোপকথনটি এমন:

-আসসালামু আলাইকুম (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

-ওয়ালাইকুম আস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। (নারী কণ্ঠ)

-পুরা বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে আইসা বলব।…এই মহিলা যে ছিল সাথে সে আমাদের শহিদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। বুঝছ? (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

‘তুমি একটা ওখানে অবস্থা এমন তৈরি হয়ে গেছে ওখানে ওই কথা বলা ছাড়া ওখানে ওরা ই করে ফেলছিল আমাকে, বুঝছ?’ (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

-আচ্ছা, বাসায় আসেন তারপরে কথা যা বলার হবে। (নারী কণ্ঠস্বর)

‘বলুম তো, তুমি বিষয়টা অন্যান্য কথা অন্যদেরকে বলতে হইব। পরিস্থিতিডা এ রকম হয়া গেছে। এই জন্য তুমি আবার মাঝখান দিয়া অন্য কিছু মনে কইর না। (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

-তোমাকে কেউ জিজ্ঞাস করলে তুমি বইল যে, আমি সব সব জানি। এই রকম কিছু একটা বইল। (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

-ঠিক আছে। (নারী কণ্ঠস্বর)

আচ্ছা। (মামুনুলের কণ্ঠস্বর)

স্ত্রীকে নিয়ে মামুনুল হক থাকেন মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিং এর এক নম্বর সড়কে একটি বাসায়। তার চারটি ছেলে।

রাত আটটার দিকে সেই বাসায় যাওয়ার পর নিরাপত্তা কর্মী ইকবাল হোসেন বলেন, মামুনুল হকের পরিবারের কেউ এখন বাসায় নেই।

তিনি জানান, মামুনুল হক বাসা থেকে বের হয়েছেন সকাল নয়টার দিকে। আর তার স্ত্রী ও সন্তানরা বের হন বিকালের দিকে। তারা কোথায় যাচ্ছেন, সেটা বলে যাননি।

মামুনুল হকের স্ত্রীর মোবাইল নম্বর পাওয়া না গেলেও তার বড় ছেলের একটি নম্বর পাওয়া গেছে, যেটিতে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

মামুনুলের আর কোনো স্ত্রী আছে কি না, এমন প্রশ্নে তার বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী ইকবাল হোসেন কিছু বলতে পারেননি।

ধৈর্য ধরার আহ্বান ফেসবুক স্ট্যাটাসে

বিব্রতকর অবস্থায় পড়ার পর রাতে মামুনুল হক উদ্ধার হন হেফাজতের সোনারগাঁওয়ের নেতা-কর্মীদের বদান্যতায়। হেফাজত কর্মীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে হামলা করে রিসোর্টে। উদ্ধার করে নিয়ে আসে তাদের নেতাকে।

সেখান থেকে স্থানীয় একটি মসজিদে কিছুক্ষণ অবস্থান করে গাড়িতে করে হেফাজত নেতা রওয়ানা দেন ঢাকার পথে।

রাত আটটার কিছুক্ষণ আগে মামুনুল হক তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি লেখেন, ‘আমি নিরাপদে আছি, পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক! কেউ কোনো গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না!!’

পরে ৯টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। এখানে বলেন, ‘সোনারগাঁওয়ের তৌহিদী জনতার প্রতি শুকরিয়া! তবে কোনো ধরণের উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ করা যাবে না!! ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর