নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়ার পর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক তার যে নাম বলেছেন, তার সঙ্গে ওই নারী নিজের যে নাম বলেছেন, তার কোনো মিল নেই।
মামুনুল বলেছেন, তার স্ত্রীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা। আর সেই নারী বলেছেন, তার নাম জান্নাত আরা।
এছাড়া, মামুনুল বলছেন তার শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম, শ্বশুরবাড়ি খুলনা। কিন্তু মামুনুলের কথিত স্ত্রীর ভাষ্য বাবার নাম অলিউর রহমান, বাড়ি আলফাডাঙা, ফরিদপুর।
মামুনুলকে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা তাকে একের পর এক প্রশ্ন করার বিষয়টি ফেসবুকে লাইভ হয়। তিনি বারবার বলতে থাকেন, সেই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। শরিয়ত মেনে তাকে বিয়ে করেছেন। আর এর প্রমাণ আছে।
পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে গেলে সেখানে যান স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারাও।
ওই নারীর সঙ্গেও এক জনের কথোপকথনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তিনি তার নিজের সম্পর্কে বলতে থাকেন।
মামুনুল যে নারীর সঙ্গে ওই রিসোর্টে যান, তার সঙ্গে এক নারীর কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেই নারী জানান, তার নাম জান্নাত আরা। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায়। তিনি মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
‘আপনার নাম যেন কী বললেন?’
-জান্নাত আরা (অস্পষ্ট)।
‘আপনার বাবার নাম?’
-অলিয়র রহমান।
‘বাড়ি কোথায়?’
-ফরিদপুর।
‘ভাঙা থানায়?’
-জ্বি।
‘না, আলফাডাঙ্গা থানায়।’
-তখন যে বললেন ভাঙা থানায়।
‘ভুল বলেছিলাম।’
-আপনি মামুনুল হক সাহেবের সেকেন্ড ওয়াইফ, না?
‘জ্বি।’
-আপনাদের কোনো বেবি নেই।
‘না।’
-ওনার প্রথম ঘরের স্ত্রীর কয় সন্তান?
‘চার ছেলে।’
-মেয়ে নেই?
‘না।’
‘এখানে কখন আসছেন?’
-লাঞ্চ আওয়ারের পরে।
‘এর আগে কোথায় ছিলেন?’
-বাসায়।
‘বাসা কোথায়? কোন বাসায়? ঢাকায়?’
‘জ্বি।’
-ঢাকা বাসা কোথায় আপনাদের?
‘মোহাম্মদপুর।’
-মোহাম্মদপুর কোথায়?
‘মোহাম্মদপুরের এখানেই বাসা।’
-এখানে কি বেড়াতে আসছিলেন নাকি থাকতে আসছিলেন?
‘বেড়াতে আসছিলাম।’
-কোথায়, মিউজিয়ামে?
‘এখানেই আসছিলাম। রেস্ট করতে।’
-বাসায় রেস্ট করার জায়গা নেই?
‘অবশ্যই আছে। বাসায় কি সবাই সব সময় রেস্ট করে? বাইরে কেন আসে। দেশের বাইরেও তো যায়। যায় না।’
-‘হ্যাঁ, যায়, সেটা তো প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখার জন্য, ঘোরার জন্য।
‘এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ আমরা দেখতে দেখতে একটু লাঞ্চ করে একটু রেস্ট করে চলে যাব।’
-হঠাৎ করে এখানে শোরগোল কেন হল, সবাই কী করে জানতে পারল বা জানল?
’আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
-আপনি বাথরুমেই কী কারণে এলেন? আপনার তো হাসব্যান্ড।
‘অ্যাকচুয়ালি আমার হাসব্যান্ড ঠিক আছে, কিন্তু আমার হাসব্যান্ড তো আর দশটা হাসব্যান্ডের মতো না। আমি সবার সামনে যেতে পারি না তাই।’
মামুনুল যা বলেছেন
এর আগে ওই নারী সম্পর্কে প্রশ্নের মুখে মামুনুল যা বলেন, সেগুলো এমন:
প্রশ্ন: আপনার কী হয়?
মামুনুল: আমার ওয়াইফ। আমি তাকে বিয়ে করেছি। শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করেছি।
প্রশ্ন: কবে বিয়ে করছেন? বিয়ে করলে রয়্যাল রিসোর্টে কেন আসবেন সময় কাটাতে?
মামুনুল: বিয়ে করেছি, প্রমাণ আছে সাক্ষী আছে।
প্রশ্ন: কয় বছর আগে বিয়ে করেছেন?
মামুনুল: দুই বছর আগে।
প্রশ্ন: দুই বছর আগে বিয়ে করলে সময় কাটাতে রয়্যাল রিসোর্টে কেন আসছেন?
মামুনুল: আমি বেড়াইতে আসছি।
প্রশ্ন: আপনার ওয়াইফের নাম কী?
মামুনুল: আমিনা তাইয়্যেবা।
প্রশ্ন: উনার বাড়ি কই?
মামুনুল: কিছুই বলব না।