চিহ্নিত উগ্রবাদীদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি লোকজনের দহরম-মহরমের কারণে উগ্রবাদীদের উদ্ধত আচরণ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছে সরকারপন্থি ধর্মভিত্তিক দল ইসলামী ঐক্যজোট।
গত ২৬ ও ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন দলটির চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘এই উগ্রবাদীদের সঙ্গে সম্পর্কিত দুই-চারজন প্রভাবশালী সরকারি ব্যক্তির ওপর যথাযথ নজরদারি বাড়াতে হবে।’
অবশ্য এই দুই-চারজন প্রভাবশালী ব্যক্তি কারা, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি সংবাদ সম্মেলনে।
১৯৯৯ সালে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের জোট ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে যখন বিএনপি ও জামায়াত জোটবদ্ধ হয়, তখন মিছবাহুর রহমান চৌধুরীও এই জোটে ছিলেন।
তবে বিএনপির শাসনামলে ইসলামী ঐকজোট থেকে বের হয়ে একই নামে আলাদা মোর্চা করেন মিছবাহুর। আর বিএনপি-জামায়াতের বলয় ছেড়ে ভিড়ে যান আওয়ামী লীগের বলয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে মিছবাহুর হেফাজতের সহিংসতার তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, এভাবে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ইসলাম অনুমোদন করে না।
তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজত নেতাদের বাদ দিয়ে মামলা হলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি তোলা হয় নির্দেশদাতাদের বিচারে। তবে ‘গুটি কয়েক’ উগ্রবাদীর জন্য ‘নিরীহ’ কওমি ছাত্ররা যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করার দাবি করা হয়।
বলা হয়, একজন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করা। পাশাপাশি হেলিকপ্টারে চড়ে যারা ওয়াজ করেন, তাদের আয়ের উৎস খুঁজে বের করার দাবিও তোলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনায় বিভিন্ন মামলার আসামিদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা। মিছবাহুর বলেন, ‘হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মামলা ছাড়া সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষক নিয়োগে কওমি সনদধারীদের প্রাধান্য দেয়ার দাবিও তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
কওমি মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম, পাঠ্যদান পদ্ধতিতে মূল ধারা বজায় রেখে আরও মানানসই করার ব্যবস্থা করার দাবিও জানান মিছবাহুর।
দেশের সব কয়টি মসজিদের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করা এবং মসজিদগুলোকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোরআন শিক্ষা ও মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার কথাও তোলেন মিছবাহুর।
তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় চাকরিরত দারুল আরকাম মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতনভাতা পরিশোধ করার দাবিও তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে। অন্যায়ভাবে দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরত বেশকিছু কর্মচারীর বেতনভাতা বন্ধ রেখে তাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে।