করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসমাগত ঠেকাতে দেশের সব বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের পর এবার বন্ধ করা হলো ঢাকার মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা।
শুক্রবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত চিড়িয়াখানা দুটি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে। শুক্রবার সকালে এ সিদ্ধান্ত নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখারুল হোসেন।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতির মাধ্যমে যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে না পারে সে জন্য ২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
জনসাধারণকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহ্বানও জানান মন্ত্রী।
এর আগে করোনা সংক্রমণ রোধে গত বছরের ২০ মার্চ প্রথমবারের মতো জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
পরে নগরবাসীর বিনোদন ও মানসিক উৎকর্ষ, চিড়িয়াখানায় থাকা প্রাণীদের খাদ্য, নিয়মিত পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা এবং সরকারের রাজস্ব ক্ষতি- সবদিক বিবেচনা করে গেল বছরের নভেম্বরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা খুলে দেয়া হয়।
চলতি বছরের শুরুর দিকেও দেশে করোনার প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু মার্চের শেষদিক থেকেই বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এক সপ্তাহ ধরে চার হাজারের বেশি শনাক্ত দেখছে দেশ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।
দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে কি না এ ব্যাপারে সরকার থেকে স্পষ্ট কিছু বলা হচ্ছে না। তবে ডব্লিউএইচওর নীতিমালা অনুযায়ী, যদি টানা দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার বাড়তে থাকে তাহলে নতুন ঢেউ আসছে বলে ধরা হয়।
দেশে গত ৬ মার্চ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ওপরে আসে। এরপর থেকে সেটি বেড়েই চলছে। বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়ায় ২২.৯৪ শতাংশ। এদিন করোনা শনাক্ত হয় রেকর্ড ৬ হাজার ৪৬৯ জনের দেহে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৯ জনের।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপ আমেরিকায় বেশি বিধ্বংসী হয়েছে। প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে বেশি। এ কারণে স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগে আবারও কঠোর হওয়ার হয়েছে সরকার। করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয় ১৮ দফার নির্দেশনা। যেখানে মাস্কপরা বাধ্যতামূলক করাসহ জনসমাগমে দেয়া হয়েছে বিধিনিষেধ।
করোনার নতুন বিস্তার পর্যটনস্পটগুলোতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় মানুষের ঘুরে বেড়ানোর স্থানগুলোতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ১৮ দফার বিধিতে।
এর আগে মৌলভীবাজার, কুয়াকাটার সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়। ঝুঁকি প্রতিরোধে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানাও।
১৮ দফা নির্দেশনা কার্যকরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান চলছে। সেই সঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধিতে চলছে প্রচার।