করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে জনসমাগম সীমিত করে সরকারের দেয়া ১৮ দফা নির্দেশনা আরও আগে আসার দরকার ছিল বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার বিএসএমএমইউ সংবাদ সম্মেলন শেষে নিউজবাংলাকে এসব কথা বলেন তিনি।
গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ছিল উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিল নিয়ন্ত্রণে। এরপর মার্চ থেকে আবার বাড়তে থাকে করোনা। দুই সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
২০২০ সালে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪ হাজারের কিছু বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেখানে এখন এক দিনে শনাক্ত ছাড়িয়েছে সাড়ে ৬ হাজারের মতো।
এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার সরকার জনসমাগম সীমিত, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ, অফিস ও গণপরিবহনে লোকবল ৫০ শতাংশ কমানোসহ নানা নির্দেশনা দেয়।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য এই ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবসম্মত, তবে এ ধরনের নির্দেশনা এক থেকে দেড় মাস আগে আসা দরকার ছিল।’
এখন কী করার আছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে জরুরি অবস্থা চলছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এখনই বিয়েসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ ও পর্যটন বন্ধ করতে হবে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার পর্যটন এলাকা নয়, দেশের সব পর্যটন বন্ধ করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ
‘সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা অনুমানও করা যাচ্ছে না। জরুরি পরিস্থিতিতে যেমন মানুষকে কিছু কাজে বাধ্য করা হয়, সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে একইভাবে মানুষকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাধ্য করার উদ্যোগ নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনার যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা হয়। উপাচার্য বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কোনো উদ্যোগ নেয়ার আগে সরকার যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে, তা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘যে যে স্থান থেকে করোনা সৃষ্টি হচ্ছে, সেই সকল স্থানে এখনই জরুরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সবাইকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১৮টি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যদি ৫০০ থেকে ১ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকে, তাহলে গোটা ঢাকা শহরকে হাসপাতাল করে ফেললেও রোগী রাখার জায়গা দেয়া যাবে না। এ জন্য যা করার এখনই করতে হবে।’