একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। দেশে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এটা ষষ্ঠ অধিবেশন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর স্পিকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষের শুভেচ্ছা জানান। এরপর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন করেন। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে তারা নাম অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে অধিবেশন পরিচালনা করবেন।
পরে স্পিকার আনুষ্ঠানিকভাবে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা করেন।
কুয়েতে দণ্ডিত হওয়া সংসদ সদস্য পদ শূন্য হয়েছে শহিদ ইসলাম পাপুলের।
স্পিকার সিলেটের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানান।
গত ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই অধিবেশন আহ্বান করেন।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও বসল এই অধিবেশন। অতি সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশন ৪ এপ্রিল শেষ হতে পারে।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার, শনিবার ও রোববার মাত্র তিন কার্যদিবস চলবে অধিবেশন। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তবে স্পিকার চাইলে সংসদ নেতার সঙ্গে পরামর্শ করে অধিবেশনের মেয়াদ বাড়াতে বা কমাতে পারেন।
এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে। তিন দিনই যারা সুস্থ, তাদের ভাগ ভাগ করে অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ পাঠাবে সংসদ সচিবালয়। প্রতিদিন কম-বেশি ১০০ থেকে ১৩০ জন সংসদ সদস্য উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ পাবেন। তবে অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে।
তা ছাড়া যে সংসদ সদস্যরা বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন, তাদের অধিবেশনে আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
দ্বাদশ অধিবেশন সম্পর্কে হুইপ ইকবালুর রহিম নিউজবাংলাকে বলেন, এবার করোনা বেড়ে যাওয়ায় মাত্র তিন দিন অধিবেশন চলবে। এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সংসদ সদস্যকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে ঢুকতে হবে। যাদের করোনা হয়েছে, তারা আসতে পারবেন না। এবারের অধিবেশনে বিশেষ কিছু নেই। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৩০ জন সংসদ সদস্যের আসন বিন্যাস থাকবে।
বিল
একাদশ সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে কয়েকটি বিল উত্থাপন হতে পারে। উত্থাপনের তালিকায় থাকা বিলগুলোর মধ্যে রয়েছে আয়োডিনযুক্ত লবণ বিল-২০২১, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০২১, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (সংশোধন) বিল-২০২১, ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য বিল-২০২১, বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল-২০২১, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১, মেডিক্যাল ডিগ্রি বিল-২০২১, মেডিক্যাল কলেজ (গভর্নিং বডিস) বিল-২০২১, হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১। এগুলোর মধ্যে কমিটিতে পরীক্ষাধীন ১টি এবং উত্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে ৯টি।
এর আগে একাদশ অধিবেশন বসে ১৮ জানুয়ারি। ১২ কার্যদিবসের ওই অধিবেশন শেষ হয় ২ ফেব্রুয়ারি।
একাদশ অধিবেশন নিয়ে সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়, অধিবেশনে কার্যপ্রণালি-বিধির ৭১ বিধিতে ৪৬টি নোটিশ এলেও একটিও আলোচনায় আসেনি। আর প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেয়ার জন্য প্রশ্ন আসে মোট ৮৪টি। এর মধ্যে তিনি উত্তর দেন ২৮টি প্রশ্নের।
করোনার মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গত পাঁচটি অধিবেশনেই সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া সাপেক্ষে অধিবেশনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয় সংসদ সদস্যদের। প্রতি কার্যদিবসে আমন্ত্রণ জানানো হয় সর্বোচ্চ ৯০ জন সংসদ সদস্যকে।
অধিবেশন চলার সময় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদেরও সংসদ ভবনে প্রবেশ সীমিত ছিল। ভবনে প্রবেশে অনুমতি দেয়া হয়নি সাংবাদিকদেরও। এবারও তাই করা হবে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
রীতি অনুযায়ী অধিবেশন শুরুর আগে স্পিকারের সভাপতিত্বে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত কয়েকটি অধিবেশনে বৈঠকটি হয়নি।