বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টিনে বেড সংকট

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৪৯

বিদেশফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য এখন পর্যন্ত ২৫টি হোটেল প্রস্তুত করেছে সরকার। হোটেলগুলোতে সাড়ে ৩ হাজার বেডের ব্যবস্থা রয়েছে। সংকট হলো প্রতিদিন বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়ে ৪ হাজার যাত্রী দেশে আসছেন। এত যাত্রীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের নির্দেশ পুরোপুরি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ জন্য যে পরিমাণ বেডের প্রয়োজন, তার জোগান নেই।

বিদেশফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য এখন পর্যন্ত ২৫টি হোটেল প্রস্তুত করেছে সরকার। হোটেলগুলোতে সাড়ে ৩ হাজার বেডের ব্যবস্থা রয়েছে। সংকট হলো প্রতিদিন বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়ে ৪ হাজার যাত্রী দেশে আসছেন। এত যাত্রীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ ঠেকাতেই নজর দিচ্ছে সরকার। আর এ জন্য যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদেরই কেবল প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবুও কাটছে না বেড সংকট।

জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন ধরন দেখা দেয়ার পর দেশটি থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৮২ ব্যক্তি বাংলাদেশে এসেছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩ হাজারের বেশি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ যাত্রী দেশে আসছে। ফলে বাকি বেডগুলো পূর্ণ হয়ে যেতে পারে দুই-এক দিনের মধ্যে। কিছু দিনের মধ্যে নতুন সংকট দেখা দেবে। এই সংকট নিরসনে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপফেরতদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে হোটেল বাড়ানো থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয় কীভাবে নিশ্চিত হবে এ বিষয়ে একটি সুপারিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিমান মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে অললাইনে বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস সভাপতিত্ব করেন।

এদিনই বেলা তিনটায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ বিষয়ে বৈঠক করেছে। কোয়ারেন্টিন ইস্যুতে সন্ধ্যা সাতটায় তারা আবার বৈঠকে বসেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ইউরোপ থেকে ফেরত ব্যক্তিদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে ২৫টি হোটেল বরদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেড সীমিত হওয়ায় আরও হোটেল বাড়াতে গত ২৯ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে কিছু দিনের মধ্যে বিদেশফেরতদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে নতুন আরও হোটেল যুক্ত করা হবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করা হয়, সরকার নির্ধারিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টার বা নির্ধারিত হোটেলে থাকার খরচ যাত্রীদের বহন করতে হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত বুধবার রাত ১২টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহারিয়ার সাজ্জাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতিদিন সাড়ে ৪ হাজারের বেশি যাত্রী আসে। বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলো থেকে ১৯০ জন যাত্রী এসেছে। তাদের বিভিন্ন হোটেলে পাঠানো হয়েছে।

‘বেড সংকট নিরসনে বিমান কর্তৃপক্ষের আরও দুইটি মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। হয়তো এরপর একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা দৃশ্যমান অবকাঠামো দাঁড়াবে।’

সাজ্জাদ জানান, প্রতিদিন যত যাত্রী আসছে তাদের সবাই যদি ১৪ দিন করে থাকে তাহলে ৬৩ হাজার বেড দরকার। বর্তমানে হোটেল রয়েছে ২৫টি। সেখানে সাড়ে ৩ হাজার বেড রয়েছে। যে কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ শুধু যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের সদস্য চৌধুরী এম জিয়াউল কবির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে আগত ও ত্যাগ করা প্রত্যেক যাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে রাখতে হবে। নমুনা দিতে হবে যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশ থেকে যারা আসবে, তাদের জন্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তারা বেবিচক নির্ধারিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টার অথবা নির্ধারিত হোটেলে থাকবেন। তবে এ ক্ষেত্রে হোটেলে থাকার খরচ যাত্রীদের বহন করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদেরও ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, বিমানবন্দর ও ফ্লাইটে সব যাত্রীকে মাস্ক পরতে হবে। যেসব বিমানের প্রতি সারিতে সিট তিনটি করে, সেই ফ্লাইটের মাঝের সিটের যাত্রীকে মাস্কের পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ফেসশিল্ড পরতে হবে।

কোয়ারেন্টিন বাস্তবায়নে ২৫টি হোটেল প্রস্তুত

বিদেশফেরতদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনার জন্য ২৫টি হোটেলকে সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ওই সব হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে যাত্রীদের।

কোয়ারেন্টিনের জন্য বরাদ্দ হোটেলগুলো হলো- বারিধারার এসকট দ্য রেসিডেন্ট লিমিটেড, গুলশান-২-এর দি ওয়েস্টিন, বারিধারার এসকট প্যালেস লিমিটেড, বনানীর প্লাটিনাম হোটেলস বাই শেলটেক, উত্তরার হানসা, গুলশান-২-এর লংবিচ সুইটস ঢাকা, হোটেল লেক ক্যাসেল, উত্তরার বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্লাস ম্যাপেল লিফ, গুলশান-২-এর হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরি, বারিধারার ডেইজ হোটেল, উত্তরার মনসুন ইন, বনানীর হোটেল আফতাব আওয়ার্স রেসিডেন্টস, বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ, গুলশান-২-এর হোটেল ট্রপিক্যাল ডেইজি, বনানীর হোটেল সুইট ড্রিম, কারওয়ান বাজারের হোটেল লা ভিঞ্চি, বনানীর আমাজন লিলি লেকভিউ রেসিডেন্স, বনানীর অমনি রেসিডেন্স, নিকুঞ্জের বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্লাস মায়া, হোটেল গ্রেস ২১, উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইন, হোয়াইট প্যালেস হোটেল, মেরিনো রয়েল হোটেল, মেমেন্টো হোটেল, রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন।

এ বিভাগের আরো খবর