করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অর্ধেক লোকবল নিয়ে অফিস পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে সচিবালয়ে বেশিরভাগ মন্ত্রণালয়ে তা মানা হয়নি।
এমন বাস্তবতায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, দুই-একদিনের মধ্যেই সব সরকারি অফিসে অর্ধেক লোকবল নিয়ে কাজ করার বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে।
সচিবালয়ে বুধবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অর্ধেক লোকবল নিয়ে অফিস পরিচালনা করার বিষয়ে প্রত্যেকটি মিনিস্ট্রিতে আমরা বার্তা দিয়েছি। প্রত্যেকটি অফিস-আদালতে আমরা বার্তা পৌঁছে দিয়েছি।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় সরকারি নির্দেশনা শতভাগ বাস্তবায়ন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু হঠাৎ করে এটি হয়েছে, সে কারণে কেউ কেউ হয়তো ৭০ ভাগ করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি দুই-এক দিনের মধ্যে অত্যন্ত জরুরি কাজে যারা সম্পৃক্ত নন তারা অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করবেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তো কমিটমেন্ট করা আছে এতদিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। এ রকম কিছু জরুরি বিষয় আছে। সেখানে হয়তো ৭০ বা ৮০ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
‘আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে লোকবলের ডিউটি রোস্টার তৈরি করে ভাগ করে দেয়ার একটা বিষয় রয়েছে।’
করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ থাকা এলাকায় জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে আবার বিধিনিষেধ, জনসমাগম সীমিত
এতে জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা ৫০ ভাগ জনবল দিয়ে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘর থেকে কাজ করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে কাজের কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনেক অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কাজ করার বিষয়ে আমরা এখন ওয়েল ইক্যুইপড।’
সরকারের এমন সিদ্ধান্তে জনভোগান্তি বাড়ার বিষয়টি প্রতিমন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এটা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না। এটা তো আমাদের করতে হবে।
‘এটা সরকারের দায়িত্ব। সামান্য ভোগান্তি হলে সকলকে বুঝতে হবে। অপ্রয়োজনে বাইরে আসার দরকার নেই।’
করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার বেশ আন্তরিক জানিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের জীবনটা ঝুঁকি মুক্ত রাখতে হবে এবং করোনা আক্রান্ত হলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। সকলকে সচেতনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’
অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করার অজুহাতে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও কিছু দায়বদ্ধতা আছে। তাদের আবার সীমাবদ্ধতাও আছে।
‘যদি কোন কোম্পানি কোনো কারণে মনে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবার কিছু ক্ষমতা আছে। তার পরেও আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয় এবং আইএলও যে সমস্ত রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন্স আছে…সেটা অনুযায়ী সবকিছু পরিচালনা করতে হয়।’
তবে সরকারের সঙ্গে দায়বদ্ধতার বা কোনো নীতির লঙ্ঘন হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।