দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার বাধ্যবাধ্যকতা জারি করেছে সরকার।
সোমবার এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে বাসের প্রতি দুই আসনে একজন করে যাত্রী নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।।
গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এই প্রজ্ঞাপনে। এতে বলা হয়েছে, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না।
যদিও সোমবার দুপুরেও রাজধানীর বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে দেখা গেছে। জোড়া আসনে দুজন করেই যাত্রী বসেছেন। এমনকি কিছু বাসে অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।
প্রজ্ঞাপনে করোনা সংক্রমিত এলাকায় আন্তজেলা যান চলাচল সীমিত এবং প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বা নিজ খরচে হোটেলে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
সরকারের নির্দেশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত বছর মার্চে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে সংক্রমণ কমে এলে শিথিল করা হয় বিধিনিষেধ। ওই বছরের ১ জুন থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। পরে পরিবহন মালিকদের অনুরোধে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সব আসন পূর্ণ করে আগের মতো চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা এখনও আমরা হাতে পাই নাই। তবে টিভিতে দেখেছি। বিআরটিএর সঙ্গে আজ একটা বৈঠক আছে। তার পরে সব উদ্যোগ নেয়া হবে। ভাড়াও বৈঠকেই নির্ধারণ করা হবে। বাস কর্মচারীদেরও গত বছরের মতোই নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অবশ্য সোমবার সকালে জানান, সংক্রমণ বেশি থাকা এলাকায় আংশিক লকডাউনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের দক্ষিণ ব্লকের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধনকালে সোমবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বেশি সংক্রমিত এলাকায় আংশিক লকডাউন দিতে পরামর্শ দিয়েছি, যা দ্রুত সিদ্ধান্ত হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ওয়াজ মাহফিল, বিয়ে-শাদি ও রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া সীমিত করার প্রস্তাব দিয়েছি। হোম অফিসের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
‘মাস্কের বিষয়ে কড়াকড়ি করতে বলা হয়েছে। বেশি সংক্রমিত এলাকায় আংশিক লকডাউন দিতে পরামর্শ দিয়েছি। দুই-এক দিনের মধ্যেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে এসে যাবে।’
অবশ্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ‘এখনই সাধারণ ছুটি দেয়া হচ্ছে না। সাধারণ ছুটি দেয়ার বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। কোনো আলোচনা হয়নি।
‘সতর্ক থেকে আমরা আগে করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছি। ফলে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা আবারও করোনা নিয়ন্ত্রণ করব।’
আরও পড়ুন: বিধিনিষেধ থাকলেও সাধারণ ছুটি নয়