বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাস্ক ছাড়া বাইরে যাবেন না : প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ২৮ মার্চ, ২০২১ ১৪:১০

করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশের প্রত্যেককে ঘরের বাহিরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরার কঠোর নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি আপনাদের বলবো, কেউ যেন মাস্ক না পড়ে বাহিরে না যায়। সকলেই যেন মাস্ক পরে। সেটা সকলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’

আবারও করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘কেউ যেন মাস্ক না পরে বাইরে না যায়। সবাইকে অবশ্যই নিরাপদ দূরত্ব মানতে হবে।

‘অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে। এটা সবার জন্য প্রযোজ্য। খোলা জায়গায় অনুষ্ঠান করলে ভালো। কারণ, এতে ভাইরাসটা ছড়াতে পারে কম।’

করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে মাঠে সক্রিয় হতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘করোনার আরেকটি ধাক্কা আসছে। সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনো কষ্ট না হয়।

‘রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। এ নির্দেশনা আগেও দিয়েছিলাম। আবারও বলছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। গরিবদের সহযোগিতা করতে হবে। নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অন্যরা যেন মেনে চলে সে ব্যবস্থা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্কুল-কলেজ খুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গেল। তাই এখন না খুলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ঈদের পরে খুলব।’

‘এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল আমরা মেরামত করার ব্যবস্থা নিয়েছি। তাছাড়া আমাদের অন্যান্য কাজগুলোও চলতে থাকবে। অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে এজন্য যা করার আমরা করব।’

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, ‘ভ্যাকসিন আমরা দেয়া শুরু করেছি। আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কারণ, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা এটা আমাদের কর্তব্য।’

‘সকলেই যেন মাস্ক পরে’

করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশের প্রত্যেককে ঘরের বাহিরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরার কঠোর নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি আপনাদের বলবো, কেউ যেন মাস্ক না পড়ে বাহিরে না যায়। সকলেই যেন মাস্ক পরে। সেটা সকলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’

‘আর যেখানে আমাদের মিটিং। আজ এখানে আপনারা এসেছেন, আগামীতে কিন্তু আরও কম সংখ্যায় থাকতে হবে। একটা নিরাপদ দূরত্ব মেনে বসতে হবে। আর প্রত্যেকটা অনুষ্ঠান সভা বা প্রশিক্ষণ যাই হোক স্বাস্থ্য বিধি মেনে করতে হবে। এটা সবার জন্য প্রযোজ্য।’

দলীয় কর্মসূচিতেও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। ওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘যে কর্মসূচিই দেয়া হোক, প্রত্যেকটিতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে। যতটুকু সম্ভব উন্মুক্ত জায়গা বা খোলা জায়গায় অনুষ্ঠানগুলো করলে….। কারণ, ঘরের ভেতর প্রাদুর্ভাবটা আরও বেশি দেখা যায়। এ বিষয়ে সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

সুবর্ণজয়ন্তীতে অংশ নেয়া অতিথিদের ধন্যবাদ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অংশ নেয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তিনি বাংলাদেশে এসেছেন এবং আমাদের এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান রয়েছে।

‘এছাড়াও এসেছেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, নেপালের রাষ্ট্রপতি। নেপাল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। এসেছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী, ভূটানের প্রধানমন্ত্রী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখনও হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেনি। ভূটান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। এই ঘোষণা সেই সময় আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

‘যারা মাঠে ময়দানে মুক্তিযুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন তাদের জন্য যেমন প্রয়োজন ছিল। সেই সঙ্গে আমরা যারা পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে বন্দি ছিলাম এই ঘোষণা শোনার সঙ্গে সঙ্গে বন্দি থাকলেও মনে হয়েছিল, আমাদের জীবন স্বার্থক যে আজকে বাংলাদেশের স্বাধীন। প্রথম একটা দেশ ঘোষণা দিয়েছে। এরপরেই ভারত ঘোষণা দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে ভূটানের প্রধানমন্ত্রী যে আমাদের এখানে এসেছেন তার কারণে কিন্তু তাকে ফিরে গিয়ে ২১ দিন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এবং এয়ারপোর্ট থেকে তিনি যে থিম্পুতে পৌঁছাবেন সেখানে তিনি ড্রাইভার নেবেন না, নিজে চালিয়ে যাবেন।

‘কারণ ড্রাইভার যদি আসে তাকেও ২১ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। কতটা আত্মত্যাগ তিনি করেছেন শুধু বাংলাদেশের এই উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রতিবেশী যে রাষ্ট্রগুলো আমাদের সহায়তা করেছেন আমরা তাদের সম্মাননা দিয়েছি। আমরা স্মরণ করতে চাই তাদের অবদানকে। মুক্তিকামী মানুষের পাশে তারা দাঁড়িয়েছিলেন, এককোটি মানুষের পাশে তারা দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় তরান্বিত হয়েছিল।

‘পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করেছি। মিত্রবাহিনী আমাদের সহায়তা করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই পাকিস্তানি শাসক বা সামরিক জান্তারা, যারা এদেশে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট করেছে। তাদেরকে পথ দেখিয়েছে এই বাংলাদেশেরই কিছু লোক। তারা সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বেইমানি করেছে মুনাফেকি করেছে। তাদের সবসময় প্রচেষ্টা ছিল বাংলদেশ যেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে না পারে।

‘আর এজন্য স্বাধীনতার পরপরই নানাভাবে অপপ্রচার চালানো, নানা অঘটন ঘটানো। এসব অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। এরা যখন দেখল যে কোনো অপপ্রচার করে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা যাচ্ছে না। ঠিক সেই সময় পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘যখন এই হত্যাকান্ডগুলো ঘটল। কিছু মানুষ, এই পাকিস্তানিরা আবার আসবে এ আসায় ছিল। জাতিরপিতা ৭ মার্চের ভাষণেই বলেছিলেন কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। আমাদের কেউ দাবায় রাখতে পারেনি।

‘২১টা বছর ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নামটা পর্যন্ত মুছে ফেলা হয়েছিল। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। সাত মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: নিউজবাংলা

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নই উন্নয়নের ম্যাজিক

আওয়ামী লীগকে বারবার ভোটে নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসার পর থেকে এই পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ১২ বছর ক্ষমতায় আছে। এই ১২ বছরে বাংলাদেশের আমুল পরিবর্তন।

‘এটা হয়েছে এ কারণে যে, যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যে আদর্শ জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা আবার সেই আদর্শ ফিরিয়ে আনি। সেই আদর্শ নিয়েই আমরা দেশ পরিচালনা করেছি। এট নতুন কিছু না, ম্যাজিক কিছু না। এটা হচ্ছে সেই আদর্শকে ধারণ করা। সেই আদর্শ নিয়েই দেশ চালানো এবং আদর্শকে বাস্তবায়ন করা। যার ফলাফল আজকের বাংলাদেশ পাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা হচ্ছে, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকের একটা মাথা গোজার ঠাঁই হবে আমরা সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন সেখানে যে মৌলিক অধিকারের কথাগুলো তিনি বলে গিয়েছিলেন, আমরা একে একে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

‘এই করোনা হয়তো আমাদের কাজে সাময়িক বাঁধা সৃষ্টি করেছে কিন্তু তার পরেও আমরা থেমে যাইনি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত কাছে এবং অব্যাহত থাকবে।’

এ বিভাগের আরো খবর