বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাংবাদিকদের ওপর হামলা হেফাজত সমর্থকদের

  •    
  • ২৮ মার্চ, ২০২১ ১২:৫০

পিকেটাররা তিনটি ট্রাক, একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয়। ছবি তুলতে গেলে তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে।

নারায়ণগঞ্জের মৌচাকের দশতলা এলাকায় পাঁচটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে হেফাজতে ইসলামের হরতাল সমর্থকরা। এ সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে তারা।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সানারপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের ছবি তোলার সময় নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোরের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধির মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় হরতাল সমর্থকরা।

সাইনবোর্ড মোড়ের কাছে জিটিভির ক্যামেরাপারসন মাসুদুর রহমান মারধরের শিকার হয়েছেন। ইট-পাটকেল ছোড়ার ফুটেজ নেয়ার সময় জিটিভির রিপোর্টার রুবিনা ও ক্যামেরাপারসন মাসুদের দিকে হরতাল সমর্থকরা তেড়ে আসে।

রিপোর্টার রুবিনা কোনোক্রমে একটি হোটেলে আশ্রয় নেন। তবে হরতাল সমর্থকরা মাসুদকে ধরে ফেলে। তাকে মারধর করে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে তিনি আঘাত পেয়েছেন।

সানারপাড় এলাকায় হরতাল সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন নিউ এইজের সাংবাদিক মোক্তাদির রশিদ রোমিও। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একদল যুবক তাকে ঘিরে ধরে। তাদের বাধা পেয়ে ফিরে আসার সময় পেছন থেকে কেউ একজন লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। হেলমেট থাকায় মাথায় আঘাত পাননি। তবে তার হেলমেট ভেঙে গেছে।

চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। তারা তিনটি ট্রাক, একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয়।

দুপুর ১২টার দিকে সানারপাড় থেকে কাঁচপুর সেতুর দিকে কিছু গাড়ি যাওয়ার সুযোগ করে দেয় পুলিশ। দশতলার সামনে আসার পর গাড়িগুলো আটকে দেয় পিকেটাররা। এরপর পাঁচটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও সাংবাদিক আহত

হেফাজতকর্মীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেস ক্লাবে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হয়েছে রিয়াজুদ্দিন জামি। তিনি প্রেস ক্লাবের সভাপতি।

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রাব্বি নূর শামস নিউজবাংলাকে জানান, জামির মাথায় ছয়টা সেলাই দিতে হয়েছে।

এ ছাড়া হেফাজত কর্মীদের ইটের আঘাতে এটিএন নিউজের ফটো সাংবাদিক সুমন রায়ের দাঁত ভেঙে গেছে।

সড়ক অবরোধ-বিজিবির গুলি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে অবস্থান নেয় হরতাল সমর্থনকারীরা। সড়ক অবরোধ করে থাকা হেফাজতে ইসলামের হরতাল সমর্থকদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে গুলি চালিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।

সানারপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকাল সোয়া ১০টার দিকে অন্তত ২০টি গুলি ছোড়া হয়।

সড়কে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন বিজিবি সদস্যরা। গুলি ছোড়ার পর মূল সড়কের পাশে বিভিন্ন গলি থেকে রাস্তায় থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায় হরতাল সমর্থকদের।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা বিজিবির কোনো সদস্যের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর ওই এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের এক কর্মী বলেন, ‘‌আমরা হরতাল পালন করছি। পুলিশ আমাদের অন্যায়ভাবে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।

‘আমাদের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই হরতাল কর্মসূচি পালন করছিলাম।’

গাড়ি ভাঙচুর-ককটেল নিক্ষেপ

সানারপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেলা ১১টার দিকে রাস্তায় যানজটে আটকে থাকা অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা। এর মধ্যে প্রাইভেট কার, বাস ও পিকআপ ভ্যান রয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টার আগে সানারপাড়ে বিজিবি ও পুলিশের দিকে তিনটি ককটেল ছোড়ে হরতাল সমর্থকরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে: নারায়ণগঞ্জের এসপি

সাইনবোর্ড এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম।

তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। তারা যে কর্মসূচি দিয়েছে কোনোভাবে যেন সহিংস না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করছি।’

কতগুলো গাড়ি পোড়ানো হয়েছে এবং এরা কারা এমন প্রশ্নের উত্তরে এসপি বলেন, ‘এখন কতগুলি গাড়ি পুড়িয়েছে সেটা নিশ্চিত না। তবে নিশ্চিত কোন স্বার্থান্বেষী দল এই কাজ করে থাকতে পারে।’

হতাহতের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হতাহতের কোনো তথ্য এখনও আমাদের কাছে নেই। হতাহতের ঘটনা এখনো ঘটে নাই বা দেখি নাই বা শুনি নাই নারায়ণগঞ্জ জেলায়। তবে এই ধরনের কর্মসূচিতে ইট-পাটকেল ছোড়ার কারণে কিছু মানুষ আহত হতে পারে।’

এসপি আরও বলেন, ‘যারা এখানে নেতৃবৃন্দ আছে তারা সহায়তা করেছে। তাদের তরফ থেকে কোনো অসুবিধা পাই নাই। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু লোক, আমি বলব তারা এই কর্মসূচির পক্ষের না। তারা হয়তো কেউ কেউ মাঝখানে এসে বাধা সৃষ্টি করেছে। যারা হরতাল ডেকেছে তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে মোনাজাত করে চলে গেছেন।

‘তার বাইরে কিছু বাইরের লোক ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার নাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই সুস্থ আছে এখন পর্যন্ত। সাইনবোর্ড, কাচপুর সড়ক ক্লিয়ার আছে। ঢাকা থেকে সাইনবোর্ড এলাকায় গাড়ি কম থাকলেও যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর