বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে পৌঁছে মতুয়াদের তীর্থস্থান হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর স্থানীয়দের উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি।
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান ওড়াকান্দিকে একদিক থেকে ‘ভারত ও বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থক্ষেত্র’ উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক। মনের সঙ্গে মনের সম্পর্ক।’
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিষয়টিকে সামনে মোদি বলেন, ‘ভারত এবং বাংলাদেশ- উভয় দেশই নিজেদের বিকাশ, নিজেদের প্রগতির চেয়ে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়। উভয় দেশই পৃথিবীতে অস্থিরতা, সন্ত্রাস ও অশান্তির পরিবর্তে স্থিতিশীলতা, প্রেম ও শান্তি চায়।’
শনিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ওড়াকান্দিতে পৌঁছানোর আগে মোদি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে মোদি সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে যান টুঙ্গিপাড়ায়। টুঙ্গিপাড়ায় তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা শেষে তিনি একটি বৃক্ষের চারা রোপণ করেন।
দ্বিতীয় দিনের অন্য কর্মসূচি
ওড়াকান্দি থেকে দুপুরে ঢাকায় প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নেবেন মোদি। বেলা তিনটায় তিনি যাবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখানে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
তারপর মোদি যাবেন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করতে। বৈঠক শেষে সরাসরি বিমানবন্দরে যাবেন তিনি।
সফরের প্রথম দিন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে ঢাকায় আসেন মোদি।
বেলা ১১টায় বিমান থেকে নামার পর তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে গার্ড অফ অনার নেন মোদি। পরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সেখান থেকে মোদি সরাসরি চলে যান ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মোদি। পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিখে একটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।
সেখান থেকে যান রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়ালে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঘুরে দেখেন তিনি।
বিকেলে নরেন্দ্র মোদি যোগ দেন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৭টায় মোদি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষ করেন।