রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় ধর্মভিত্তিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় ছবি তুলতে গেলে অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আহত সাংবাদিকদের অভিযোগ, ‘মারধরের ছবি তুলতে গেলেই আমাদের মারছেন সরকার দলের সমর্থকরা। সংঘর্ষে মারধরের ছবি তোলাই কাল হচ্ছে।’
বায়তুল মোকাররমে মারধরের শিকার হয়েছেন দৈনিক প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক হাসান রাজা। তিনি বলেন, ‘আমরা বায়তুল মোকাররমের গেটের পাশ থেকে ছবি তুলছিলাম। সে সময় আমাদের কিছু সহকর্মীকে মারধর করা হচ্ছিল। সেই ছবি তুলতে গেলে আমাকেও মারছে। আমাদের প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক আশরাফুল আলমও আহত হয়েছেন।’
সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক ইশতিয়াক ইমন। তার মাথা ফেটে গেছে। পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তার চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বায়তুল মোকাররমে পুলিশের ছড়রা গুলিতে আহত হয়েছেন বাংলা ভিশনের সাংবাদিক দীপন দেওয়ান, বাংলা নিউজের শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও মেরাজ মাহাবুব।
ছড়রা গুলিতে আহত বাংলা ভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক দীপন দেওয়ান। ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বায়তুল মোকাররম ও আশপাশের এলাকা।
যে কোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে জুমার নামাজের আগে থেকেই বায়তুল মোকাররমের চার পাশসহ মতিঝিল ও গুলিস্তান এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মোদির সফরবিরোধী ধর্মভিত্তিক দলগুলো এক পাশে এবং অপর পাশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। নামাজ শেষে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ধরে বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে এই সংঘর্ষ চলে।
এ সময় আরও আহত হয়েছেন দেশ রূপান্তরের রুবের রশিদ, বিডিনিউজের অভি, বণিক বার্তার পলাশ শিকদার, ডেউলি সানের রিয়াদ সুমন, ডেউলি স্টারের এমরান হোসেন, ফজলুল শেখ বাবুসহ অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক।
এর আগে বৃহস্পতিবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মারধরের ছবি সংগ্রহ করতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হামলায় দুই সাংবাদিক গুরুতর আহত হন। তারা হলেন বাংলা ট্রিবিউনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আবিদ হাসান রাসেল ও প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আসিফ হাওলাদার।