বায়তুল মোকাররম এলাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতাকারী ধর্মভিত্তিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষের মধ্যে একজন অস্ত্রধারীর গুলি ছোড়ার ছবি পাওয়া গেছে।
তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর পুলিশ বলছে, তারা অস্ত্রধারী কাউকে দেখেনি।
দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে। তবে পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ গেটে।
বিকেল তিনটার পরে দক্ষিণ গেট দিয়ে এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মসজিদের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। মসজিদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় অন্তত পাঁচবার ফাঁকাগুলি ছোড়ে সেই অস্ত্রধারী যুবক।
অস্ত্র হাতে তার অ্যাকশনের তিনটি ছবি ধরা পড়েছে নিউজবাংলার ক্যামেরা। আকাশি রঙের পাঞ্জাবি আর শুভ্র পাজামা ছিল পরনে। মাথায় কালো হেলমেট। ধারণা করা হচ্ছে, নিজের চেহারা আড়াল করতেই এই কৌশল বেছে নিয়েছেন অস্ত্রধারী যুবকটি।
একটি ছবিতে দেখা যায়, দুই হাতে অস্ত্র ধরে সামনের দিকে তাক করে গুলি ছুড়ছেন ওই যুবক। অপর দুটি ছবিতে বেশ আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে ডান হাতে অস্ত্র নিয়ে সামনের দিকে ছুটছেন তিনি।
তবে চেষ্টা করেও তার পরিচয় জানা যায়নি। দিন-দুপুরে অস্ত্র হাতে ফাঁকা গুলি ছোড়া এই যুবক কোন পক্ষের সমর্থক সেটা বুঝে ওঠাও ছিল মুশকিল।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বায়তুল মোকাররমের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া, আর কারও কাছে কোনো প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না।’
পুলিশের এমন ভাষ্যে প্রমাণ হয়, অস্ত্রধারী যুবকটি সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো সদস্য নয়। তাহলে প্রশ্ন আসছে তিনি কে?
নিউজবাংলার ক্যামেরায় অস্ত্রধারীর ছবি ধারণের বিষয়টি মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে বাইরের কারও কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না।’
নিউজবাংলাকে অস্ত্রধারী যুবকের ছবি সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’
জুমার নামাজের পর বেলা পৌনে দুইটার দিকে মোদিবিরোধীরা সমবেত হয়ে শ্লোগান দিয়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন।
সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে ছিলেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা। তারাও মসজিদে নামাজ পড়েন।
মোদিবিরোধীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মসজিদের ভেতর থেকে ধাওয়া দিলে বাইরে অবস্থান নেন তারা। মিনিট দশেক পরে মিছিল করে উত্তর দিকের লাগোয়া সড়কে অবস্থান নেন তারা। এ সময় তাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে মারা হয় মসজিদের ভেতর থেকে।
ইট ছুড়ে মারা এক তরুণকে নিয়ে আসার সময় মোদিবিরোধীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। সেখান থেকে চলে এসে আবার একজোট হন তারা। শুরু হয় হামলা-পাল্টা হামলা।