দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত সরকারের দেয়া গান্ধী শান্তি পুরস্কার তার দুই কন্যার হাতে তুলে দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শুক্রবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনের মূলমঞ্চে বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই পুরস্কার দিতে পারাটা ভারতের জন্যও গৌরবের।’
গত ২২ মার্চ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার জন্মশতবার্ষিকীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার।
মোদির বাংলাদেশ সফরের আগে গান্ধী পুরস্কারের জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণাকে দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকরা।
১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর এই পুরস্কার দিয়ে আসছে ভারত সরকার। অহিংস আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ও ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর স্মরণে প্রবর্তন করা হয় এই পুরস্কার।
সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, অহিংস উপায়ে রাজনৈতিক বিবর্তন ঘটানো এবং গান্ধীর অন্যান্য মতাদর্শ লালন করা ব্যক্তিত্ব বা প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
পুরস্কারে রয়েছে ১ কোটি টাকা, একটি স্মারক এবং ভারতের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প সামগ্রী।
এবার একসঙ্গে ২০১৯ ও ২০২০ সালের জন্য পুরস্কারটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯ মার্চ হয় জুরি সভা। তাতে সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুকে ২০২০ সালের জন্য নির্বাচিত করা হয়। আর ২০১৯ সালের জন্য পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে ওমানের প্রয়াত সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদকে।
কাবুস আধুনিক আরব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতা ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মৃত্যু হয় তার। কাবুসের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছিলেন মোদি।
এর আগে গান্ধী শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই বছর একসঙ্গে আগের চার বছরের জন্য দেয়া হয় পুরস্কারটি।
ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, এই পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সভাপতি থাকেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সঙ্গে থাকেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ও লোকসভায় একক দল হিসেবে বিরোধীদলীয় পার্টির নেতা।
এবারের জুরিতে আরও দুইজন সদস্য ছিলেন। তারা হলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিরলা ও সুলভ ইন্টারন্যাশনাল সোস্যাল সার্ভিস অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী বিন্দেশ্বর পাঠক।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে টুইট করেন নরেন্দ্র মোদি। এতে লিখেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানবাধিকার ও স্বাধীনতার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ভারতীয়দের কাছেও তিনি নায়ক। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা উভয় দেশের ঐতিহ্যকে আরও ব্যাপক ও গভীর করে তুলেছে এবং বঙ্গবন্ধু যে পথ দেখিয়েছিলেন তা গত দশকে উভয় দেশের অংশীদারত্ব, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির এক দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে।’