বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার শিগগিরই গ্রেপ্তার হবেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য দেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিগগিরই পি কে হালদার গ্রেপ্তার হবেন। এরই মধ্যে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল তাদের সব অফিসে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের জন্য রেড অ্যালার্ট নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছে।
পি কে হালদার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পি কে হালদার সম্পর্কে সবশেষ তথ্য হলো ইন্টারপোল তাদের প্রত্যেকটি অফিসে রেড অ্যালার্ট সংক্রান্ত নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি, অচিরেই পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করা যাবে।’
ঠিক কবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শিগগিরই তিনি গ্রেপ্তার হবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি ইন্টারপোল তাদের সব অফিসে নোটিশ জারি করে দিয়েছে। এমনকি এ মামলার তদন্তও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’
বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন পি কে হালদার। গত ৭ সেপ্টেম্বর পি কে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছিল।
ওই আবেদনে বলা হয়েছিল, দেশে ফিরে পি কে হালদার ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিনিয়োগকারীদের যে টাকা নিয়ে গেছেন তা উদ্ধার করতে দেশে ফিরতে চান। এ জন্য দুদক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে থাকতে চান আদালতের কাস্টডিতে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পি কে হালদার।
এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা।
এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট ও সম্পত্তি জব্দ করা হয়। আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে অপসারণও করা হয়।
এদিকে, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের মাধ্যমে অনেককে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে দুদকের এ আইনজীবী বলেন, ‘একক ব্যক্তি হিসেবে ইকবাল মাহমুদের পক্ষে কাউকে অব্যাহতি দেয়ার আইনগত কোনো ক্ষমতাই নেই। সম্পূর্ণ ভুল একটা তথ্য দেয়া হচ্ছে। কমিশন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়।’
তিনি বলেন, কোন মামলার কার্যক্রম চলবে, কোনটা পরিসমাপ্তি হবে, কোনটা হবে না, কোনটার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হবে কিংবা হবে না এই সব সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। একক ব্যক্তি হিসেবে ইকবাল মাহমুদের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই। আইন সেটা সমর্থন করে না।
এ ছাড়া মামলা হওয়ার পরে দুদক যখন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়, তখন আদালতে ওই প্রতিবেদন মঞ্জুর হতে হয়। আদালত ওই প্রতিবেদন অনেক সময় গ্রহণ না করে পুনঃতদন্তের জন্য পাঠায় বলেও তিনি জানান।
গত পাঁচ মাসে দুদক কতগুলো মামলার অনুসন্ধান কাজ শেষ করেছে, কতগুলো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আদালত যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে, আদালতের নির্ধারিত তারিখে আগামী ১১ এপ্রিল এফিডেভিট করে দাখিল করা হবে বলেও তিনি সাংবাদিকদের বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, দুদকে গোপনে কিছু হয় না। সব কিছু স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই হচ্ছে।