ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারও দুরভিসন্ধি থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক ক্যাম্পে আগুন দিয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতি আছে কি না তাও গুরুত্ব পাচ্ছে তদন্তে।
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বুধবার দুপুরে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর নিয়েও কথা বলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, জোর করে কাউকে ভাসানচরে নেয়া হবে না। তবে সেখানে যাওয়া নিয়ে কেউ অসন্তোষ সৃষ্টি করলে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে বেলা পৌনে ২টার দিকে মন্ত্রী হেলিকপ্টারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান। ক্যাম্প এক্সটেনশন-৪-এর হেলিপ্যাডে অবতরণের পর তিনি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে র্যাবের তত্ত্বাবধানে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মধ্যে পোশাক বিতরণ করেন।
বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ঘর হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা। বর্তমানে তাদের অধিকাংশই তাঁবু খাটিয়ে এবং অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন জানান, ৩ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা পরিবারকে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় দেয়া হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও রেডক্রিসেন্টসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা গতকাল দুপুর থেকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি কাজ শুরু করেছে। তিন দিনের মধ্যেই তারা প্রতিবেদন জমা দেবে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় জরুরি সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা ও ৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।
মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ আরও অনেকে।
সোমবার বিকেল ৪টার দিকে চার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগে, যা নিয়ন্ত্রণে আসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন জানিয়েছে, তাদের কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফ ও রামু স্টেশনের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে যোগ দেয় সেনাবাহিনীও। অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেছে ১১ জনের। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন।