উখিয়ার বালুখালীর চার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লাগা আগুনে চার হাজারের বেশি বসতঘর ও দোকান পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে লাগা ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে।
আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুনের কারণও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওবায়দুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির দাবি, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে ৮ নম্বর ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেন ‘কিছু’ রোহিঙ্গা। ধীরে ধীরে তা ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ক্যাম্প ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ক্যাম্পে আগুন লাগার পর কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারপাশ। আতঙ্কে সড়কে অবস্থান নেয় রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষরা।
ক্যাম্পে আগুন লাগার পর সড়কে অবস্থান নেয় রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষরা। ছবি: নিউজবাংলা
থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য নুরুল বশর জানান, বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
স্থানীয় লোকজন আরও জানান, আগুনের ঘটনায় বালুখালি জুড়ে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোকে ক্যাম্প এলাকায় পৌঁছতে বেগ পেতে হয়। রাত সাড়ে ৯টার পর আগুন আর ছড়ায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোথাও কোথাও জ্বলছিল।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফ ও রামু স্টেশনের ছয়টি ইউনিট রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছু-দৌজা জানান, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের সূত্রপাত। পরে পাশের ৯, ১০ ও ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আগুনের কারণ জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা। তিনি জানান, আগুনে বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্প পুরো ভস্মীভূত হয়েছে।
সামছু-দৌজা বলেন, ‘বাতাসের গতি বেশি হওয়ায় আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। লাগোয়া তিনটি ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চার সহস্রাধিক বসতঘর ও দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
‘আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও লোকজন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও এপিবিএন সদস্যরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন।’
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাশাপাশি টেকনাফের একটি, কক্সবাজারের দুটি এবং রামুর একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
৮ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ তানজীম জানান, ক্যাম্পের ঘরগুলো টিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি। এ কারণে দ্রুত বাড়ে আগুনের তীব্রতা।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা গোবিন্দ ভট্টাচার্য বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার খবরে শুরুতে চারটি ইউনিট সেখানে যায়। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও দুটি ইউনিট।’
আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি বলে জানান তিনি।
১৬ এপিবিএন-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা রাত ১০টার দিকে জানান, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।