দেশের সব মানুষের জন্য গুণগত ও মানসম্মত নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিটি জেলায় একটি করে পানি পরীক্ষাগার নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। একইসঙ্গে পানির অপচয় রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার বিশ্ব পানি দিবসে রাজধানীর একটি হোটেলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক সেমিনারে এলজিআরডি মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের কাছে যে পানি সরবরাহ করা হবে সেগুলোর গুণগত মান ঠিক আছে কি না, পানির মধ্যে প্রয়োজনীয় উপাদান ছাড়া ক্ষতিকর বস্তু আছে কি না তা পরীক্ষা করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে প্রচুর পানি অপচয় করে থাকি।’
পানি ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এছাড়া ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে প্রচুর শিল্প-কলকারখানা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এতে করে স্বাভাবিকভাবেই পানির ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। আমরা যদি সামগ্রিকভাবে পানি ব্যবহারে সতর্ক না হই তাহলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
‘এসডিজি ২০৩০ অনুযায়ী দেশে ভূপৃষ্ঠের পানির ব্যবহার ৭০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা থাকলেও এর আগেই আমরা লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষকে পানিসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত রেখে উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব নয়। দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সবাইকে উন্নয়নের সুফলের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
সেমিনারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘সরকার সারা দেশে উন্নত পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছে। আমি প্রত্যাশা করি টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সফল হবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, ওয়াটার এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি এবং সুইডেন রাষ্ট্রদূত।