দলমত-নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দল সততা আর আন্তরিকতা নিয়ে হতদরিদ্র মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে পাশে দাঁড়ালে দেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।
জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সোমবার বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘সরকার ও রাজনৈতিক দল যখন সততা, আন্তরিকতা দিয়ে জনস্বার্থে কাজ করে তখন জাতির উন্নতি ও কল্যাণ নিশ্চিত হয়। সাধারণ হতদরিদ্র মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে দলমত-নির্বিশেষে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারলে দেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। মুজিববর্ষে এটাই হবে সবচেয়ে বড় অর্জন।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অন্তরালের বঙ্গবন্ধু আরও বেশি শক্তিশালী। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এ দেশের জনগণ থাকবে, তত দিনই বঙ্গবন্ধু সকলের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।’
নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বকে আলোকিত করেছেন জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ দীর্ঘ সময়ে দেশের চেহারা অনেক বদলে গেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে সেই বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার পথে দ্রুত অগ্রসরমান।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। আর তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আরাধ্য কাজ সম্পন্ন করেছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার। তারই দেখানো পথে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে অযুত বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যোগ দেয়ায় নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান রাষ্ট্রপতি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রতি নেপালের সর্বাত্মক সহযোগিতার বিষয়টি স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নেপাল অগ্রগণ্য। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয় নেপাল। সেই অবদানের স্মারক হিসেবে ২০১২ ও ২০১৩ সালে ১১ নেপালিকে বাংলাদেশের মৈত্রী সম্মাননা দিয়েছে সরকার।’