‘আমার বাবাকে যখন ওরা মারছিল, বাবা তখন বারবার তাদের পা ধরে আকুতি করছিল, আমাকে মারিস না। আমি তোদের চাচা; বাপের মতো। আমাকে ছেড়ে দে বাবা। কিন্তু তারা বাবাকে ছাড়েনি। পেটাতে পেটাতে বাবাকে ওরা মেরেই ফেলল।’
এভাবেই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সাবেক ইউপি সদস্য মোসলেম উদ্দিন হত্যার বর্ণনা দেন তার মেয়ে মাসুদা বেগম।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান নিউজবাংলাকে জানান, শুক্রবার উপজেলার পশ্চিম বৈদ্যনাথ গ্রামে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ভাতিজাদের পিটুনিতে আহত হন মোসলেম উদ্দিন। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান তিনি।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মঞ্জু মিয়া ১৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। রাতেই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার বিকেলে গাইবান্ধা আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন নিহত মোসলেমের ভাতিজা জোগদুল মিয়া, সাজু মিয়া, দুলা মিয়া এবং বাবলু মিয়ার স্ত্রী বুলবুলি বেগম।
স্থানীয়রা জানান, ৬০ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মোসলেমের সঙ্গে ভাই মছির উদ্দিনের ছেলে দুলা মিয়ার বিরোধ চলে আসছিল। এ ছাড়া পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে মছিরের অন্য ছয় ছেলের সঙ্গেও বিরোধ রয়েছে তার। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিশে মোসলেমের পক্ষে রায় এলেও ভাতিজারা তা না মেনে নেননি।
তারা আরও জানান, শুক্রবার জমি দখলে বাধা দিতে গেলে ভাতিজা আলম, আঞ্জু, বাবলু, সাজু, জোগদুল ও ডাবলু দেশি অস্ত্র নিয়ে মোসলেমের পক্ষের ওপর হামলা চালান। এ সময় মোসলেমকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তারা।
মোসলেমকে বাঁচাতে গিয়ে এ সময় তার ছেলে-মেয়েসহ সাতজন আহত হন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।