ঢাকার বায়ুমান উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় বেলারুশ। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও টেকসই জ্বালানি খাতে প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা বিনিয়োগে আগ্রহ পূর্ব ইউরোপের দেশটির।
ঢাকা ক্লাবে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের এসব খাতে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানান বেলারুশের বাণিজ্য উপমন্ত্রী দিমিত্রি কেরিটনসিক।
স্বধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৬ মার্চ ছয় দিনের জন্য ঢাকা সফরে আসেন কেরিটনসিক। সফরে সাক্ষাৎ করেন এলজিডিই মন্ত্রী, ঢাকা উত্তরের মেয়র, বাণিজ্যমন্ত্রী এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে।
সংবাদ সম্মেলনে কেরিটনসিক জানান, ইউরোশিয়ান ফেডারেশনভুক্ত বেলারুশ ঢাকার বায়ুমান উন্নয়নে পরিবেশবান্ধব ইলেক্ট্রিক বাস সরবরাহ, পুনর্ব্যবহারযোগ্য গ্রিন এনার্জি, পরমাণু বিদ্যুৎ খাতে প্রযুক্তি সহায়তা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চায় তার দেশ।
এ ছাড়া বাংলাদেশের কৃষির আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ১০০ বছরের বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেলারুশ।
কেরিটনসিক বলেন, ‘ঢাকার বায়ুমান ভালো নয়। এটা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে বেলারুশের। বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, নির্মাণসামগ্রী ও কৃষি খাতে নজর দেয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে বেলারুশের গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
বাংলাদেশ উন্নয়শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ইউরো এশিয়ার অর্থনৈতিক জোনে প্রবেশ করতে পারে বলে মনে করেন বেলারুশের উপমন্ত্রী।
বর্তমান সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বেলারুশ মনে করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ এবং তার নেতৃত্বেই ২০৪১ সালে উন্নত দেশের পথ খুঁজে পাবে।’
ঢাকা ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানান বেলারুশের বাণিজ্য উপমন্ত্রী দিমিত্রি কেরিটনসিক। ছবি: নিউজবাংলা
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে সে সময় রাশিয়ার সঙ্গে ছিল বেলারুশ। স্বাধীনতার ঠিক পরেই বেলারুশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল। সবার আগে বেলারুশ কৃষি সরঞ্জাম সরবরাহ করে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ বিশেষ করে মেশিনারিজ এবং পেট্রোবাংলার যানবাহনসহ চট্টগ্রাম ট্রান্সফর্মার উৎপাদন প্রকল্প সরবরাহ করে।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও বেলারুশ বিভিন্ন সময়ে সবচেয়ে খারাপ গণহত্যার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ হারিয়েছে ৩০ লাখ মানুষ। আর বেলারুশ হারিয়েছে তার জনসংখ্যার প্রায় ৩ জনের ১ জনকে। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জাতি হিসেবে আমরা মূল্যটি অনুভব করতে পারি।’
তিনি জানান, বাংলাদেশ জাতির স্বাধীনতাসংগ্রামের সময়, বেলারুশে জন্মগ্রহণ করা সোভিয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই গ্রোমেকো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি কিসিঞ্জারকে হারিয়ে সবচেয়ে সফল কূটনীতিক হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় বেলারুশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত এন্ড্রু রাজুসকি ও বাংলাদেশে অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ কুমার রায়।