বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাল্লার অপরাধীদের দ্রুত বিচার আদালতে শাস্তির দাবি

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২১ ১৩:৪১

নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘শাল্লার ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পাশাপাশি এই ঘটনার আড়ালে যারা জড়িত বা যারা উসকানিদাতা তাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে। দ্রুত বিচার আদালতে সংক্ষিপ্ত সময়ে এদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হিন্দু-অধ্যুষিত নোয়াগাঁওয়ে হেফাজতের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে দ্রুত বিচার আদালতে অল্প সময়ে বিচার শেষ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে সংগঠনটি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক সাংসদ ও সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, নির্মল রোজারিও, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, জয়ন্তী রায়, জয়ন্ত সেন দীপু, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, জয়ন্ত দেব, তাপস কুমার পাল, নির্মল চ্যাটার্জী, শ্যামল রায়, কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, পদ্মাবতী দেবী, রবিন বসু, দিপালী চক্রবর্তী, মতিলাল রায়, শিশির রায়, তাপস বলসহ অনেকে।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘সুনামগঞ্জের শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলা ও লুটপাট হয়েছে। দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অসাম্প্রদায়িক শক্তির মধ্যেও বিভিন্ন অপশক্তি ও বিপথগামী শক্তি রয়েছে, যারা জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড চায়।

‘তাদের এই অপশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে। এই অপশক্তি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তৎপরতা চালাচ্ছে; হামলা করছে। নাসিরনগর, রামু, সাঁথিয়া, মুরাদনগরেও হামলা হয়েছে। কাজেই আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’

তিনি বলেন, ‘শাল্লার ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পাশাপাশি এই ঘটনার আড়ালে যারা জড়িত বা যারা উসকানিদাতা তাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে। দ্রুত বিচার আদালতে সংক্ষিপ্ত সময়ে এদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

‘প্রশাসন গ্রেপ্তার করলেও শাস্তি দেয়ার প্রক্রিয়া দেখা যায় না। এ জন্য সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।’

দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের জন্য সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে ঐক্য পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘ভারতবিরোধিতার নামে এখানে গণতন্ত্রকে দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে। মুজিববর্ষে জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তীতে ৫ দেশের প্রধানরা আসবেন ও এসেছেন। ঠিক সে সময়ে একটা শ্রেণি সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে।’

তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এমন অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।

সংগঠনের আরেক সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ‘সুনামগঞ্জের যে হামলা, এটা হিন্দুদের ওপর হামলা নয়; এটা স্বাধীন রাষ্ট্রের ওপর হামলা। এর মানে রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুর্বল করে সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র৷ এটা বুঝতে সমস্যা হলে বুঝতে হবে, বাঙালি জাতির অস্তিত্ব হুমকিতে রয়েছে।

‘এই ষড়যন্ত্রের পেছনে পরাজিত পাকিস্তানি শক্তি ও তাদের অনুসারীরা রয়েছে। একজন মামুনুল হক ক্রীড়নক মাত্র। তাদের পিছন থেকে নাড়াচ্ছে যাদের এ দেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা রয়েছে তারা।’

রোজারিও বলেন, ওই চক্রের মূল লক্ষ্য হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান নয়, তাদের লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে পরাজিত করা।

এটাকে শুধু দেশের ভেতরের ঘটনা হিসেবে না দেখে একে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত হস্তক্ষেপ ছাড়া এই ধরনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এ জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে মনিটরিং করতে হবে। তা না হলে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে।’

সাবেক সাংসদ ও সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘শাল্লা উপজেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়েও তদন্ত হওয়া উচিত। তারা কি সরকারি নামে বিরোধী দলের কোন এজেন্ট কি না সেটা দেখতে হবে। তাদের নজরদারি থাকলে এভাবে শাল্লায় হামলা হতে পারত না।’

তিনি বলেন, ফেসবুকে ধর্ম অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে এর আগে কক্সবাজারের রামু, পাবনার সাঁথিয়া, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কুমিল্লার হোমনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, ভোলার বোরহানউদ্দিন, মুরাদনগরের কোরবানপুরে হামলা হয়েছে, যার বিচার হয়নি।

সর্বশেষ ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে প্রশ্ন রেখে বক্তারা এমন ঘটনা আর কত দিন চলবে, এমন প্রশ্ন রাখেন।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় কয়েক হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত মামলায় ৩০ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ বিভাগের আরো খবর