বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২১ ১৫:৪০

‘যদি মোদিকে আসতে দেয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই সন্ত্রাসে পরিণত হব। বাংলা হবে আফগান, আমরা হব তালেবান। আমরা ওসামা বিন লাদেনের মতো হুংকার দিয়ে উঠব। আমরা কোনো বাধা মানব না। আমরা রাসুলসেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা।…বুলেট বোমাকে ভয় করি না আমরা।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল ও সংগঠনের বিক্ষোভে বাংলাদেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করার হুমকি দেয়া হয়েছে। নিজেদের তালেবানের মতো জঙ্গিতে রূপান্তরের কথাও জানানো হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই বিক্ষোভ হয়।

বিক্ষোভে নানা জন নানা রকমের বক্তব্য দেন। এর মধ্যে মাইক হাতে একজনের বক্তব্য সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।

ওই বক্তা বলেছেন, মোদি বাংলাদেশে এলে তারা সন্ত্রাসে পরিণত হবেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সরকার। ২৬ মার্চ তিনি ঢাকায় আসবেন।

সুবর্ণজয়ন্তীতে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকার বাইরেও যাবেন মোদি। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সেখানকার ওড়াকান্দি ও সাতক্ষীরায় দুটি মন্দিরও পরিদর্শন করবেন তারা।

মোদিকে উগ্রবাদী আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে বামপন্থি ও ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এই সফরের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। দুই পক্ষই ভারতীয় সরকারপ্রধানের সফর ঠেকিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বায়তুল মোকাররমের ওই বক্তা বলেন, ‘যদি মোদিকে আসতে দেয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই সন্ত্রাসে পরিণত হব। বাংলা হবে আফগান, আমরা হব তালেবান।’

আফগানিস্তানে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে তালেবান জঙ্গিরা বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। ৯০ দশকের শেষ দিকে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও দখল করে নেয়।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে বিমান হামলার পর আফগানিস্তানে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু করে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান দেশটি। সে সময়ও কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের নেতারা ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ স্লোগান দিয়ে সভা সমাবেশ করে।

সে সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের নেতা ফজলুল হক আমিনী পল্টন ময়দানে হাতে তলোয়ার নিয়ে উপস্থিত হয়ে এই স্লোগান দেন। তবে তালেবান জঙ্গিরা পরে কোণঠাসা হয়ে গেলে কওমিপন্থিরা আর এই বিষয়টি নিয়ে আগায়নি।

জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম থেকে বের হওয়া মোদিবিরোধী বিক্ষোভ

তবে সম্প্রতি তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতায় আসার পর বাংলাদেশে কওমিপন্থিরা আবার প্রকাশ্যে তালেবানদের প্রশংসা করা শুরু করেছে।

বায়তুল মোকাররমের ওই বক্তা বলেন, ‘আমরা ওসামা বিন লাদেনের মতো হুংকার দিয়ে উঠব। আমরা কোনো বাধা মানব না। আমরা রাসুলসেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা।…বুলেট বোমাকে ভয় করি না আমরা।’

তিনি বলেন, ‘হে মুসলমান ভাইয়েরা, তোমাদের পেছনে সবচেয়ে বড় ব্যাকআপ আছে আল্লাহ রাসুল। আল্লাহ আমাদের পক্ষে আছেন। সুতরাং আমরা বলতে চাই, কোনো বাধা মানা যাবে না। ইসলামের স্বার্থে আল কোরআনের স্বার্থে আলেম ওলামার স্বার্থে দেশের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্য হয়ে লড়ব।’

মোদি বিরোধিতা কেন?

সামসুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘মোদি মুসলমানদের বাবরি মসজিদ ভেঙে আমাদের রক্তে নয়, আমাদের কলিজায় আঘাত হেনেছেন। আমরা বাংলার মাটিতে তাকে স্বাগত জানাতে পারি না। শুধু তাই নয়, আমরা জানি, কাশ্মীরের মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা করেছেন এই মোদি। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাতে পারি না। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ পালন করতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমরা মোদিকে সাধুবাদ জানাতে পারি না।’

বায়তুল মোকাররমে ধর্মভিত্তিক দলের বিক্ষোভে গোলযোগের আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ

বিক্ষোভ মিছিল

জুমার নামাজের পর বক্তব্য পর্ব শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে প্রায় ১ হাজার লোক মিছিল শুরু করে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন, ফরায়েজী আন্দোলন প্রভৃতি দলের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।

এ সময় গোলযোগের আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। তারা বিভিন্ন সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

ধর্মভিত্তিক দলের নেতা-কর্মীরা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা কয়েকটি ইট তাদের দিকে ছুড়ে মারে। তবে পুলিশ ছিল সহনশীল ভূমিকায়।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘কোনো ধরনের সাংঘর্ষিক ঘটনা ঘটেনি।’

মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে নাইটিঙ্গেলের মোড় ঘুরে বায়তুল মোকাররমে এসে শেষ হয়।

এ বিভাগের আরো খবর