৪০ লাখ টাকার পণ্য কিনলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি গাড়ি দেয়া হবে। আর ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পণ্য কিনলে পাওয়া যাবে ‘ডায়মন্ড পদবি’। আর এই পদবি থাকলে প্রতি মাসে আয় করা যাবে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার ও প্রচারণা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে এমন সব অস্বাভাবিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় নিওলাইফ গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড নামক মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিটি।
ভুক্তভোগীদের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিওলাইফ গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি ও সিইও মো. নূরুল আমীন, ফিন্যান্স ডিরেক্টর মো. রিয়াজ উদ্দীন ও হেড অফ মার্কেটিং মঞ্জুরুল ইসলাম রাসেল।
সাইদুর রহমান বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে এভাবে প্রচারণা চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রচারণায় বিশ্বাস করে বিনিয়োগ করেছেন অনেকে। একসময় প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয় সব তথ্য। তখনই বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারেন তারা প্রতারিত হয়েছেন।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। যে কারণে তাদের শনাক্ত করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্তে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
অবৈজ্ঞানিকভাবে গ্রাম্য ডাক্তার দিযে মাশরুমের সিরাপ তৈরি করে চক্রটি বিক্রি করত বলে জানান সাইদুর রহমান। এই চক্রটি মাগুরা থেকে মাশরুমের পণ্য ৩০ টাকা দরে কিনে এনে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে সিরাপ তৈরি করে প্রতি বোতল ১ হাজার ৫৬০ টাকা দরে ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে বিক্রি করত। প্রতারণার অন্যতম কৌশল ছিল মাশরুম বিক্রয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের অনুমতি ছাড়া নিওলাইফ গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি পণ্য বিক্রির আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক চক্র গড়ে তোলে। এর বিষয়ে আরও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে ও তদন্ত চলছে।’