সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এক ক্ষণজন্মা পুরুষের নাম। ১৯৪০ সালে রাজনীতিতে যোগদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ পথযাত্রার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
তিনি ১৯৬৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা দেন। তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা মামলা দেন, তাকে কারাগারে নেন। তবে প্রবল গণ-অভ্যুত্থানে পাকিস্তান সরকার তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭০ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়নি। এতে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সেনানিবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আহ্বান সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন। তার এই ভাষণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
‘বাঙালি জাতির জন্য আজ ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। আজ বাঙালি জাতির জনকের ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস। বঙ্গবন্ধু আমাদের মহান স্বাধীনতার রূপকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার দিন থেকে আমরা মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু করেছিলাম। কিন্তু গত এক বছর আমরা কোভিড সংক্রমণের কারণে মুজিববর্ষের যে পরিকল্পনা আমাদের ছিল, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এরপরও আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুজিববর্ষ উদযাপনের চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন আয়োজন করেছি। নতুন প্রজন্ম যদি তার আদর্শ-চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারে, তাহলেই হবে এই দিবসটি উদযাপনের সার্থকতা। আসুন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থেকে আমরা একযোগে কাজ করব।’
বক্তব্য রাখছেন মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন। ছবি: নিউজবাংলা
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের নিসর্গ চত্বর থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ তিন শতাধিক সেনাসদস্য এতে যোগ দেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সেনানিবাসের মূল প্রবেশপথসহ বিভিন্ন স্থাপনা আলোকায়ন করা হয়েছে। সেনানিবাসের বিভিন্ন সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাণী সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের গুইমারা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি রিজিয়ন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, আর্টিলারি সেন্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।