নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো, জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং উন্নয়নকাজ এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও সুইডেন।
রোববার সকালে সচিবালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ও সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী পের ওলসন ফ্রিধ।
এ সময় প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনা, টেকসই পরিবেশ, স্থলজ ও জলজ প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, চিকিৎসা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বাংলাদেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে জানিয়ে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি ফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশনের আঞ্চলিক অফিস ঢাকায় স্থাপনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং দুদেশের সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সব বাংলাদেশি নাগরিককে অভিনন্দন জানান সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন অন্যতম দাবি করে শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে সুইডেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতার সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে।’
বাংলাদেশে সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সারা দেশে ১ কোটি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়েছে, যা পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের এমন মহামারি প্রভাব থেকে পৃথিবী সুরক্ষায় সুইডেনের জোরালো অবস্থানের কথা উল্লেখ করে পের ওলসন ফ্রিধ বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সুইডেন নিবিড়ভাবে কাজ করবে।’
বাংলাদেশ সরকারের নেয়া ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রশংসা করেন সুইডিশ মন্ত্রী। এ সময় মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলন ‘স্টকহোম+ ৫০’ কনফারেন্সে অংশ নিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান ওলসন ফ্রিধ।
বৈঠকে অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, যুগ্মসচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলীসহ মন্ত্রণালয় ও সুইডিশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা।