চট্টগ্রামে অবৈধভাবে পরিচালিত সব ইটভাটা বন্ধে দুই সপ্তাহ বেঁধে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
এর ফলে অবৈধ সব ইটভাটা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আর কোনো বাধা রইল না।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।
চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ১৪ কার্যদিবস সময় দিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে চট্টগামের রাউজান থানার ১৮টি ইটভাটার মালিক। তাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত সেটি স্থগিত না করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। আপিল বিভাগ সকালে শুনানি করে আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু। অপরপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, আদালত শেষবারের মতো চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে চট্টগ্রামের রাউজান থানার ১৮টি ভাটার মালিক আপিল আবেদন করে। চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।
আপিল বিভাগ ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকল। এখন ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতেই হবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া গড়ে ওঠা সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কাঠ ও পাহাড়ের মাটি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে, এমন ইটভাটার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেয় আদালত।
পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয় আদালত।
চট্টগ্রামের যে ৭১টি অবৈধ ইটভাটাকে এরই মধ্যে জরিমানা করা হয়েছে, সেগুলোসহ সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম প্রশাসন ও সেখানকার পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন রিটকারী। আদালত সে আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার শেষবারের মতো সময় দেয়।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত) ২০১৯)-এর ৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চালানো যাবে না। এর ব্যত্যয় হলে আইনের ১৪ ধারা অনুসারে ২ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় শ শ ইটভাটা চলছে। এতে মারাত্মক পরিবেশদূষণ হচ্ছে। এ ছাড়া ১৮২টি ইটভাটা জ্বালানি হিসেবে কাঠ ও পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি বলেও উল্লেখ করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।