দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় আটটি পয়েন্টে বসানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) ক্যামেরা।
অবৈধ জাল পেতে মা মাছ নিধনরোধ, ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালাচল বন্ধ, বালু উত্তোলন বন্ধ ও ডলফিন রক্ষায় হালদা নদীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে এসব ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আটটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (পিটি জেড, ৩৬০ ডিগ্রি, ২ কিলোমিটার জুম) ক্যামেরার মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব সিসিটিভি ক্যামেরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্নস্থান থেকে স্মার্টফোন এবং একাধিক ডিভাইস দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।’
সম্প্রতি সদরঘাট নৌ থানার আওতায় হাটহাজারী উপজেলার রামদাশ মুন্সির হাটে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী নৌ-পুলিশ ক্যাম্প।
ওসি এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডলফিন হত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। এরপর থেকে আমরা হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। আগামী এপ্রিল মাসে প্রাকৃতিক প্রজননের মাস শুরু হবে। মা-মাছের যাতে ক্ষতি না হয়, স্বাভাবিকভাবে ডিম ছাড়তে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্যে কাজ করছি।’
আটটি পয়েন্টে বসানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) ক্যামেরা
হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নৌ-থানা ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে টহল জোরদার এবং মনিটরিং করার উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
‘দেশের কোনো নদী প্রথমবারের মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হলো। বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত হালদা নদী আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাই হালদা পাড়ের বাসিন্দাদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই।’
গত বছর দেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা থেকে আহরিত ডিমের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি। যা এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ।