সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২১-২০২২ সেশনের নির্বাচনে ভোট শুরু হয়েছে।
দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনে ভোট শুরু হয় বুধবার সকাল ১০টার দিকে। ভোট শেষ হবে বিকেল ৫টায়।
মাঝে দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে। এ নির্বাচনে ৭ হাজার ৭২১ জন আইনজীবী তাদের ভোট দিচ্ছেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকেই ভোট শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টে সাদা ও নীল প্যানেলের সমর্থকদের ভিড় দেখা যায়। ভোটারদের কাছে শেষবারের মতো ভোট চাইতে দেখা যায় প্রার্থী ও সমর্থকদের।
নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির সদস্য বিএম ইলিয়াছ কচি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ৬১টি বুথে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। সিনিয়র আইনজীবী ও অসুস্থদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নির্দলীয় হলেও অঘোষিতভাবে এবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের দুটি আলাদা প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দুই দলের সমর্থকদের মধ্য থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীও হয়েছেন অনেকে।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে সভাপতি পদে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু এবং সম্পাদক পদে আবদুল আলীম মিয়া জুয়েলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের (নীল প্যানেল) সদস্য সচিব ফজলুর রহমানকে সভাপতি পদে এবং সম্পাদক পদের জন্য বারের বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এটি ছাড়াও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে আরেকটি প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান এবং সম্পাদক পদে মির্জা আল মাহমুদও নির্বাচন করছেন।
এ ছাড়া লাল প্যানেল নামে আরেকটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়। ওই প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট কে এম জাবির ও সম্পাদক পদে মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর বাইরেও সভাপতি পদে মো. ইউনুস আলী আকন্দ স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়েছেন।
আওয়ামী সমর্থিত সাদা প্যানেল: বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে (সাদা প্যানেল) এ বছর নির্বাচনে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, সম্পাদক পদে আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল প্রার্থী হয়েছেন। এ প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন সহসভাপতি পদে মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা ও মো. আলী আজম, কোষাধ্যক্ষ পদে ড. মো. ইকবাল করিম, সহসম্পাদক পদে ব্যারিস্টার সাফায়েত সুলতানা রুমি ও নুরে আলম উজ্জ্বল।
সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মিন্টু কুমার মন্ডল, মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ, সানোয়ার হোসেন, এবিএম শিবলী সালেকীন, সিরাজুল হক, মহিউদ্দিন আহমেদ ও মাহফুজুর রহমান রোমান।
বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল: বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুর রহমানকে সভাপতি এবং ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে সম্পাদক প্রার্থী করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুটি সহসভাপতি পদে জয়নাল আবেদিন তুহিন ও জালাল আহমেদ, দুটি সহ-সম্পাদক পদে মাহমুদ হাসান ও রাশিদা আলম ঐশী, কোষাধ্যক্ষ পদে আব্দুল্লাহ আল মাহবুবকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাতটি সদস্য পদে মনজুরুল আলম সুজন, শফিকুল ইসলাম শফিক, গোলাম মোহাম্মদ জাকির, পারভীন কাওসার মুন্নি, রেদওয়ান আহমেদ রানজিব, নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব ও ইফতেখার আহমেদ প্রার্থী হয়েছেন।
এর বাইরে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্য থেকে বিদ্রোহী হয়ে প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান এবং সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়াও সহসভাপতি পদে নাহিদ সুলতানা ও সাবিনা ইয়াসমিন লিপি, কোষাধ্যক্ষ পদে নাসির উদ্দিন খান সম্রাট, সহ-সম্পাদক পদে জুলফিকার আলী জুনু ও সুলতান মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেলের সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন শাফিউর রহমান শাফি, মো. মুনির হোসেন, একেএম মুক্তার হোসেন, মহিত উদ্দিন জুবায়ের, আকবর হোসেন, ওয়ালিউর রহমান শুভ ও নাজমুল হাসান।
সব ছাড়িয়ে এবার রেড প্যানেল নামে ভিন্ন আরেকটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
এ প্যানেলে সভাপতি পদে কে এম জাবির, সম্পাদক পদে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি পদে নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. বদিউজ্জামান তপাদার, সহসম্পাদক পদে মো. সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য পদে শহিদুল হক, এস কে এম আনিসুর রহমান খান ও জহিরুল আলম বাবর প্রার্থী হয়েছেন।
বরাবরের মতো এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে সাবেক বিচারক বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের নির্বাচন উপকমিটি করা হয়।