নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন করে উড়িয়ে দিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পৌরসভা প্রাঙ্গণে হামলা, লুটপাট, মুজিব শতবর্ষ উদ্যাপনের মঞ্চ ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষের হামলার অভিযোগ এনে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলতেছি জনস্বার্থে। প্রতিপক্ষ কথা বলতেছে নিজস্ব স্বার্থে। তবে জাতীয় নেতারা কেন চুপ করে আছেন, তা আমি জানি না। উনাদের হস্তক্ষেপে যারা অপরাজনীতি করে, তাদের সাথে আমি রাজনীতি করতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগে থাকতে না পারলে, প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করব।’
কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘দলের (উপজেলা আওয়ামী লীগ) বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জাসদের লোক। দুজনই হাইব্রিড। খিজির হায়াত জাসদের প্ররোচনায় এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তাদের এ কমিটি আমরা মানি না। আমরা গঠনতান্ত্রিক উপায়ে এখানে কমিটি করেছি। সেই কমিটির নেতৃত্বে এখানে (কোম্পানীগঞ্জে) আওয়ামী লীগ চলবে। এটাই হলো শেষ কথা। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে।’
খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে কাদের মির্জা বলেন, ‘ওইখানে তার অনুসারীদের নিয়ে হট্টগোলের চেষ্টা করলে, আমি সেখানে গিয়ে তাদের সরে যেতে বলেছি এবং খিজির হায়াত খানকে রিকশায় তুলে দিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জা এর আগে রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসনের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে আলোচনায় উঠে আসেন।
কাদের মির্জাকে দায়ী করে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন। ছবি: নিউজবাংলা
বহিষ্কারের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার খিজির হায়াত খানের ওপর হামলা ঘটনায় কাদের মির্জাকে দায়ী করে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে জেলা ও সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে বক্তব্য দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জামেল হক মিলন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. শাহজাহান, মিজানুর রহমান, আবুল কাশেম ও মো. জামাল উদ্দিন এবং টাউন হলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল শাকিব পারভেজ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিল নোয়াখালীর সভাপতি জাকির হোসেন বাবরসহ অনেকে।
বক্তারা হামলার ঘটনায় কাদের মির্জাকে দায়ী করে অবিলম্বে তাকে খিজির হায়াত খানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। তা ছাড়া কাদের মির্জাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
এদিকে কাদের মির্জাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক প্রতিবাদ সভায় এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার জহিরুল হায়দার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম, আবদুল হক, এরফানুল হক, মফিজল হক, নুর নবী, আবদুল গোরফান, আবুল বাশারসহ অনেকে।