ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করে পলাতক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বিরুদ্ধে আরও ১০ মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
১০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে এসব মামলায়।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে মামলাগুলো অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে দুদক সচিব আনোয়ার হোসেন ব্রিফিংয়ে বলেন, ১০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নথি দিয়ে ৮০০ কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন ও সেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
তিনি জানান, ওই ১০ মামলায় আসামি করা হয়েছে ১০টি প্রতিষ্ঠানের ৩৭ জনকে। একই সঙ্গে পি কে হালদারের সহযোগী ৩৩ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারির অনুমোদন দিয়েছে দুদক ।
দুদক সচিব জানান, পি কে হালদারের সহযোগী ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেমসহ ৪৫ জনের ইমিগ্রেশন বন্ধ চেয়ে ইমিগ্রেশন অথরিটির কাছে পত্র দেয়া হয়েছে।
পি কে হালদারের নামে চলমান ছয় মামলার সঙ্গে নতুন মামলাগুলো যোগ হবে। যেকোনো সময় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাগুলো হবে।
তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে ব্যাংকার পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। তিনি গত বছরের অক্টোবরে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়ে প্রথমে ভারত যান। পরে চলে যান কানাডা।
পাঁচটি ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনকে আসামি করে গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি পাঁচটি মামলা করে দুদক।
সব মামলাতেই আসামি হিসেবে রয়েছে পি কে হালদারের নাম। আসামিদের মধ্যে তার সহযোগী পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক এমডি রাশেদুল হককে ২৪ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার করে দুদক। রাশেদুল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় অর্থ আত্মসাতে নিজের ও কয়েকজনের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
১৩ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় দুদক। মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় পি কে হালদারের আরেক সহযোগী শংখ ব্যাপারীকে।
গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে তার বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট।