আফ্রিকার সুদান ও উগান্ডার কৃষিতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে বাাংলাদেশ।
এ উদ্যোগে দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে বাংলাদেশ।
জেদ্দায় ওআইসির সদর দপ্তরে সোমবার সংস্থাটির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার সকালে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আন্তবাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
বৈঠকে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর জোর দেন শাহরিয়ার আলম। এ মহাদেশের কৃষি প্রকল্পে বাংলাদেশ দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তি জ্ঞান সরবরাহ করতে পারে বলে জানান তিনি।
ওআইসি মহাসচিবকে শাহরিয়ার আলম বলেন, সুদান, উগান্ডাসহ অন্য দেশ তাদের অনাবাদি উর্বর জমি এসব প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারে। সেখানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ওআইসির অন্য সমৃদ্ধিশালী দেশ অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত কৃষি প্রকল্প থেকে ওআইসির সদস্য দেশগুলো উপকৃত হতে পারে।
মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন প্রতিমন্ত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ওআইসির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া খুঁজে দেখা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসি মহাসচিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের যে অভাবনীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অর্জন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়াকে তিনি বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য সফলতা হিসেবে মন্তব্য করেন।
মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি ওআইসির সদস্যভুক্ত অনেক দেশের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকটে পাশে থাকার আশ্বাস
বৈঠকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয় উল্লেখ করে টেকসই সমাধানে ওআইসির জোরদার ভূমিকা রাখার পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য গত মাসে বাংলাদেশে ওআইসির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠানোয় মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ জানান।
ওআইসির মহাসচিব ড. ওথাইমিন প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি সংকট নিরসনে ওআইসির পক্ষ থেকে সব সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ওআইসিকে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি শক্তিশালী সংস্থা হিসেবে দেখতে চায়। তিনি ২০২০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ব্রেনস্টরমিং সেশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ওআইসির সংস্কারকাজ এগিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানান।
শাহরিয়ার আলম ওআইসির নিয়োগে সমভাবে ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্বের ওপর জোর দেন। তিনি ওআইসির সদস্যভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সফরসঙ্গীদের ওআইসির মহাসচিব নিজ কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানান। বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, জেদ্দার দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরবে রয়েছেন।