ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার জীবিত বা মৃত নারী বা শিশুর নাম ঠিকানা, ছবি, পরিচয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মস্থলের পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে হলফনামা আকারে তথ্য সচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ আদেশের পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধে বিবাদীদের নিস্ক্রীয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারী ও শিশুর ছবি-পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন।
আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার কোনো নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশে আইনে বাধা থাকলেও হরহামেশাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে করে তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন।
‘বিশেষ করে সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ছবি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এ ছবি প্রকাশের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাই সংক্ষুব্ধ হয়ে এ রিট করেছিলাম। আদালত শুনানি নিয়ে এ আদেশ দিয়েছে।’
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৪ ধারায় এ বিষয়ে বিধি-নিষেধ উল্লেখ আছে।
১৪ এর (১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোনো সংবাদপত্রে বা অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।
১৪ এর (২) উপ-ধারা (১) এর বিধান লংঘন করা হইলে উক্ত লংঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।