স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামীতে দেশেই উৎপাদন হবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের টিকা।
সোমবার রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘করোনার এক বছরে বাংলাদেশ: সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক বড় বড় ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। সেইসব কোম্পানিকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘টিকা তৈরি করতে একটা ল্যাব দরকার। ওষুধ প্রশাসনের একটি ল্যাব আছে। এই ল্যাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পেতে আমরা আবেদনও করেছিলাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সেই অনুযায়ী ল্যাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার মধ্যে ওষুধের কোনো সংকট ছিল না। করোনার চিকিৎসার জন্য রাতারাতি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যে কারণে আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো করেছি। অনেক দেশে এখনও লকডাউন চলছে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনার কারণে।’
স্বাস্থ্য খাতে আরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস শিখিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য খাতকে অবহেলা করলে কী হয়। করোনার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। কাজেই আগামীতে এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য দেশে করোনার বিস্তার লাভ করলেও আমাদের দেশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
গরমে করোনা কিছুটা বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সাবেক উপাচার্য বলেন, ‘এর গতি-প্রকৃতি কেমন তা জানতে গবেষণা করা প্রয়োজন। তবে গবেষণার জন্য টাকা প্রয়োজন। এই টাকার জোগান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেই দিতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন,
‘দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি চলছে, এর কার্যকারিতা যাচাইয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। এ ছাড়া যাদের টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তাও জানা দরকার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করতে চায়, এ বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে তৈরি করতে চাই। এ জন্য আমরা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করছি। এ জন্য একটি ফান্ড দরকার, সেই ফান্ডের ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, যেভাবে কাজ করে করোনাকে দমন করতে পেরেছি।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন, স্বাচিপ সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেসামুল হক, ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহসহ আরও অনেকে ।