বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৭ মার্চ, ২০২১ ১৬:৫৬

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ কথাটি দুবার বলেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেষের বার সব থেকে জোর দিয়ে বলেছেন। ফলে এটা যে স্বাধীনতার সংগ্রাম, এই যুদ্ধটা যে স্বাধীনতার যুদ্ধ হবে, সেই কথাটাই তিনি স্পষ্ট বলে গেছেন। কাজেই এটা একদিক থেকে বলতে গেলে সাতই মার্চ তো প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেয়া ৭ মার্চের ভাষণকে ‘প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ শিরোনামের বিশেষ আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার দিবসের মূল আয়োজন করা হলেও ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন প্রান্ত থেকে তাতে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ কথাটি দুবার বলেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেষের বার সব থেকে জোর দিয়ে বলেছেন। ফলে এটা যে স্বাধীনতার সংগ্রাম, এই যুদ্ধটা যে স্বাধীনতার যুদ্ধ হবে, সেই কথাটাই তিনি স্পষ্ট বলে গেছেন। কাজেই এটা একদিক থেকে বলতে গেলে সাতই মার্চ তো প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সাতই মার্চের ভাষণে তিনটি স্তর আছে। একটা ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। আছে বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস, অত্যাচার, নির্যাতনের ইতিহাস তখনকার বর্তমান অবস্থাটা। কীভাবে সেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গুলি করে মানুষ হত্যা করছে।

‘কীভাবে মানুষ ভোট দিয়েছে, মানুষের সেই অধিকারকে তারা বঞ্চিত করছে। সেই বঞ্চনার ইতিহাস, সেই নির্যাতনের ইতিহাস তিনি বলেছেন। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবার সকল নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।’

৭ মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি এও জানতেন, যে মুহূর্তে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাটা বাস্তবে অফিশিয়ালি দেবেন, সেই মুহূর্তে তিনি বেঁচে নাও থাকতে পারেন। সেজন্য তার এই ঐতিহাসিক ভাষণের ভেতরে স্বাধীনতার ঘোষণাটা দিয়ে গেলেন। তিনি বলে গেলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।”'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের পর পাকিস্তানিরা চুপ করে বসে থাকবেন না। যেকোনো মুহূর্তে আক্রমণ করতে পারে, বঙ্গবন্ধু সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আর তাই আন্তর্জাতিক সমর্থন যাতে বাঙালিরা পেতে পারে সেভাবেই রণ কৌশল সাজিয়েছিলেন।’

সরকার বলেন, ‘নিজের জীবনটা ঝুঁকিতে ফেলে বাংলাদেশের মানুষ যেন স্বাধীনতা পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু তিনি এই রণকৌশল হাতে নিয়েছিলেন। যে মুহূর্তে পাকিস্তানি শাসকরা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল সেই মুহূর্তেই তিনি তার এই স্বাধীনতার ঘোষণাটা প্রচার করা শুরু করালেন। যেহেতু বাঙালিরা পাকিস্তানিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, সেহেতু পরবর্তী আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে আমাদের কোনো বেগ পেতে হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, স্বাধীনতার পর দেশকে যখন অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে বঙ্গবন্ধু নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এলো ১৫ আগস্ট। স্বপরিবারে হত্যা করা হলো বঙ্গবন্ধুকে।

কথাগুলো বলতে গিয়ে বাষ্পরূদ্ধ হয়ে আসে প্রধানমন্ত্রী কণ্ঠ। কান্নার স্বরে বলেন, ‘যেখানে পাকিস্তানি শাসকরা তাকে বার বার হত্যার চেষ্টা করেছে, ফাঁসির আদেশ দেয়া সত্ত্বেও ফাঁসি দিতে পারেনি। আর যে বাঙালির জন্য তিনি নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করেছেন, যে বাঙালির জন্য জীবনের সব স্বাদ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছেন, দিনের পর দিন কারাগারের অন্তরালে নির্যাতন ভোগ করেছেন, যে বাঙালিকে আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিয়ে গেছেন, একটা রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন, জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন, কী দুর্ভাগ্য যে তাদের হাতেই জীবন দিতে হলো।’

‘সত্য দাবায়ে রাখা যায় না’

যে ভাষণ স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালিদের ঝাপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সে ভাষণই নিষিদ্ধ করা হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘৭৫-এর পর এই ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ বাজানো যাবে না, চালানো যাবে না। অলিখিত একটা নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।

‘ইতিহাসকে এত সহজে মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে কখনও দাবায়ে রাখা যায় না। আর বাঙালিকে দাবায়ে রাখা যায় না, সেটা তো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলে গেছেন।’

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল স্বীকৃতির বিষয়টি সামনে এনে সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকে সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে। আজকে এই ভাষণ বিশ্ব স্বীকৃতি যেমন পেয়েছে, তেমনি জাতিসংঘে প্রতিটি ভাষায় এই ভাষণটা অনুবাদ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাষায় অনুবাদ করে এটি প্রচার করা হচ্ছে।

‘বঙ্গবন্ধুর নিজের সৃষ্টি বাংলাদেশে যে ভাষণ একদিন নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, আজকে জাতিসংঘে সেটা স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিটি ভাষায় এটি অনুবাদ করা হয়েছে।’

উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালি জাতি আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাল্লাহ, জাতির পিতার আকাঙ্ক্ষা আমরা পূর্ণ করব, বাংলাদেশের মানুষ তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। সেই মুক্তির পথে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর