বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই বজ্রঘোষণার সুবর্ণজয়ন্তী

  •    
  • ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০৩

৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচর-নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালিকে মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম জনযুদ্ধে পরিণত হয়।

স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রকণ্ঠের ডাকের সুবর্ণজয়ন্তী আজ। আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালির ইতিহাসের সেই অবিস্মরণীয় দিনটির সূচনা হয়েছিল।

এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে উত্তাল জনসমুদ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এই ভাষণের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচর-নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালিকে মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালির স্বাধীনতাসংগ্রাম জনযুদ্ধে পরিণত হয়।

ওই ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে নিজস্ব স্থান করে নেয় লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে লিপ্ত হয় ষড়যন্ত্রে। পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্য ছিল, যেকোনোভাবে শাসনক্ষমতা নিজেদের দখলে রাখা।

নানা টালবাহানা শেষে পাকিস্তানের ওই সময়ের রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেই অধিবেশন মুলতবির ঘোষণা আসে ১ মার্চ।

প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাঙালিরা। ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালন করে আওয়ামী লীগ। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বলিষ্ঠ কণ্ঠে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ঐতিহাসিক এ দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর কালজয়ী ভাষণগুলোর অন্যতম। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তিকামী জনগণকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে ঐ ভাষণ ছিল এক মহামন্ত্র। একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ।’

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় নিজ-নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা তার বাণীতে বলেছেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে অমিতশক্তির উৎস ছিল এ ঐতিহাসিক ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আমাদের ইতিহাস এবং জাতীয় জীবনের এক অপরিহার্য ও অনস্বীকার্য অধ্যায়, যার আবেদন চির অম্লান। কালজয়ী এই ভাষণ বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত ও মুক্তিকামী মানুষকে সব সময় প্রেরণা যুগিয়ে যাবে।’

দিনের কর্মসূচি

সময় পরিক্রমায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের ইউনেস্কো। তবে এবার ভিন্ন আঙ্গিকে উদযাপিত হচ্ছে ৭ মার্চ। গত বছরের ১৫ অক্টোবর ৭ মার্চ ভাষণের দিনটিকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করেছে সরকার। কালজয়ী ৭ মার্চের ভাষণের দিনটি স্মরণে প্রতিবছর ওই দিনে সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আর সে জন্য ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২’-এ ৭ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধান যুক্ত করে ১১ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। চার দিন পর, ১৫ ফেব্রুয়ারি তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয়।

ভোরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি দিনটি উদযাপনে বেলা ৩টায় ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেখানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ ছাড়া ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন এবং দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে আওয়ামী লীগ। সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে দলটি। আর ৮ মার্চ বেলা ৩টায় আলোচনা সভাও করবে আওয়ামী লীগ। সেখানে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এই প্রথমবারের মতো ৭ মার্চ উদযাপন করতে যাচ্ছে বিএনপি। জাতীয় প্রেসক্লাবে বেলা ৩টায় আলোচনা সভা করবে দলটি। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সভাপতি খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

এ বিভাগের আরো খবর