তদন্তের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিন ৭ মার্চ সামনে রেখে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের শুধু সুপারিশ করা হয়েছে, সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। দুই মাসের মধ্যে তারা দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করবে।‘রিপোর্ট পাওয়ার পর কমিটিতে আলোচনা হবে। চুলচেরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমদের মিটিংয়ে কিছু লোকের খেতাব বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন আত্মস্বীকৃত খুনি, আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি। আলোচনা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। অনেকে অনেক উদাহরণ ও তথ্য দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ কেউ পত্রিকায় লিখেছেন এটা বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, কেউ কেউ বলেছেন কমিটি করা হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি মিডিয়ায় বিষয়টা পরিষ্কার করতে। আমরা খেতাব বাতিল করি নাই।
‘সিদ্ধান্ত হয়েছিল তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করবে তিনি (জিয়াউর রহমান) কবে, কোথায়, কীভাবে খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটা বের করার পর আমরা জাতির সামনে পেশ করব।’বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। গত ৯ ফেব্রুয়ারি জামুকার ৭২তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জামুকার সভা শেষে বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও জামুকা সদস্য শাজাহান খান।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনের মদতদাতা। সেই হিসেবে পাঁচজনের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে শরিফুল হক ডালিম ‘বীর উত্তম’, নূর চৌধুরী ‘বীর বিক্রম’, রাশেদ চৌধুরী ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিন ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পেয়েছিলেন।
জামুকার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, ‘তাদের নামের পাশে যে খেতাব আছে, তারা যেসব সুযোগসুবিধা পায়, সমস্ত কিছু বাদ দেবে মন্ত্রণালয়।’
জামুকার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে জিয়াউর রহমানসহ খেতাব বাতিল হওয়া বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও তাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগসুবিধা পাবে না।
এ বিষয়ে জামুকার মহাপরিচালক জহুরুল ইসলাম রোহেল বলেছিলেন, ‘জামুকার বৈঠকে সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনার পর এই পাঁচজনের খেতাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন আমরা প্রস্তাব আকারে তা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’