সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে জয়শঙ্করকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি বঙ্গবন্ধু এয়ারবেজে অবতরণ করে বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌহিদুল ইসলাম।
বিমানবাহিনীর এয়ারবেজে জয়শঙ্করকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও জয় শঙ্করের বৈঠকের কথা রয়েছে।
মুজিব শতবর্ষ পালন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন উপলক্ষে ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সফরকে এগিয়ে নিতেই জয় শঙ্করের এ সফর বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
জয়শঙ্করের সফরে আলোচনা হতে পারে এমন বিষয় ও এজেন্ডা সম্পর্কে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এজেন্ডা তো টেবিলে সব সময়ই কিছু না কিছু থাকে। এবারও অনেক কিছু থাকবে। তবে এবার সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বা পাবে কানেক্টিভিটি।
‘কানেক্টিভিটি ও পারস্পরিক সাহায্যের ক্ষেত্রে বাণিজ্যে ও দুর্যোগে ভারত আমাদের সাহায্য করছে। তবে যোগাযোগ ক্ষেত্রে এবার যুগান্তকারী কিছু ঘোষণা আসবে। নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। নতুন একটি ট্রেন চালু হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ঘোষণা দেবে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কোভিড কিন্তু কেবল একটি স্বাস্থ্য ইমার্জেন্সি বিষয় নয়। এটা কিন্তু একটি অর্থনৈতিক ইমার্জেন্সিও তৈরি করেছে বিশ্বব্যাপী। এটা সারা বিশ্বের সাপ্লাই চেইনে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এর প্রভাব আমাদের বাজারেও ঘটতে পারে, এ নিয়ে আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট।
‘আপনারা জানেন ভারত থেকে আমাদের দেশে প্রচুর ম্যাটেরিয়াল আসে, যা দিয়ে রপ্তানি পণ্য তৈরি হয়। রপ্তানি বাজার এইসব পণ্যে চাঙা হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। আমরা ভারতের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব, যাতে এর কোনো প্রভাব আমাদের আমদানি-রপ্তানি বাজারে না পড়ে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে থাকা অভিন্ন নদী নিয়ে যে বৈঠকগুলো হচ্ছিল না, তা হওয়া শুরু হয়েছে। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে এ নিয়ে যে সমস্যা আছে তার সমাধান হবে, তাও আমরা আশা করি না; যেহেতু এরপরেই প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক রয়েছে।
‘ডেলিভারেবলস যেগুলো আমরা বড় বৈঠকের জন্যই রেখে দেই। তবে যতটুকু এগিয়ে রাখা যায়, তা আমরা রেখে দেব।’
ভারতের সঙ্গে কমপ্রেহেনসিভ এগ্রিমেন্ট সই হতে পারে, ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদ সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইকোনোমিক ফ্রন্টে যে কাজগুলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসবেন, তখন বাংলাদেশ জাতিসংঘ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার সুপারিশ পেয়ে গেছি।
‘এর সঙ্গে আগামী তিন বা ছয় বছর আমাদের অর্থনীতি আরও গতিশীল করার জন্য আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতা নিশ্চিত করেছি, যেটাতে অনেকে মনে করেছিলেন নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ডোমেস্টিক চ্যালেঞ্জ থাকার পরও প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে আমরা তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। আমি ট্রানজিটের কথা বলছি। সেটা এখন আর বড় ইস্যু নয়। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছিলেন, সেখানে দক্ষতা বাড়িয়ে কীভাবে সিমলেস করা যায়, সে দিকে নজর দিতে।
‘ভারত সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী নেপাল ও ভুটানে আমাদের পণ্যবাহী গাড়ি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এগুলো কীভাবে আরও বেশি ব্যবহার করা যায়, ভারত সেখানে আমাদের কেমন সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।’